অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শহীদি মার্চ: বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি ঘোষণা


আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণের এক মাস পূর্তি উদযাপনে সমাবেশ ও মিছিল। ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণের এক মাস পূর্তি উদযাপনে সমাবেশ ও মিছিল। ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণের এক মাস পূর্তি উদযাপনে ছাত্র-জনতা শহীদ ও আহতদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে সমাবেশ ও মিছিল করেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এই সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্যোগে 'শহীদি মার্চ' নামের এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

শহীদি মার্চ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (এডিএস) সমন্বয়কারীরা পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন।

দাবিগুলো হলো- গণহত্যার সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে গ্রেফতার; যত দ্রুত সম্ভব নিহতদের পরিবারকে অর্থনৈতিক ও আইনি সহায়তা দেওয়া; প্রশাসনিক খাতের দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা এবং গণভবনকে (প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন) 'জুলাই-স্মৃতি জাদুঘর' ঘোষণা করে দ্রুত রাষ্ট্র সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।

সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “রক্ত দিয়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারকে অপসারণ করেছি এবং এর জন্য আমাদের রক্ত ঝড়াতে হয়েছিল। যদি ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার চেষ্টা করে এবং প্রয়োজন হলে আমরা আবার রক্ত দেব। যেমনটি আমরা আগে দিয়েছি। কোনো ধরনের অনিয়ম, সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি থাকবে না। শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না।”

কেন্দ্রীয় ‘শহীদি মার্চে’ মাদরাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে এবং শহীদদের প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে স্লোগান দেয়। এ ছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৃথকভাবে সাধারণ জনগণ ও শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে।

বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, হাসিব আল ইসলাম, আবু বকর মজুমদার ও আবদুল হান্নান মাসুদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণ থেকে কেন্দ্রীয় পদযাত্রাটি শুরু হয়।

স্কুল শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, “আজ আমি এখানে এসেছি শহীদি মার্চের কর্মসূচিতে যোগ দিতে। এটা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। প্রথম স্বাধীনতা আমাদের ভূমি দিয়েছে এবং দ্বিতীয় স্বাধীনতা থেকে আমরা আমাদের মৌলিক চাহিদা এবং অধিকারগুলো সংরক্ষণের প্রত্যাশা করছি। এই লড়াইয়ে আমরা বাংলাদেশি ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়েছি এবং সেই লড়াইয়ে জিতেছি। ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে সব ত্যাগ বৃথা যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার জরুরি।”

বন্ধুদের নিয়ে মিছিলে যোগ দিতে আসেন মাদরাসাছাত্র খালিদ মারুফ।

তিনি বলেন, “আন্দোলনের সময় আমরা যাত্রাবাড়ীর মোড়ে ছিলাম। আমার কয়েকজন ভাই ও সহকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। কেউ কেউ এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।”

তিনি বলেন, “আগের সরকারের আমলে আমরা আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আসতে পারিনি, মনের কথা স্বাধীনভাবে বলতে পারতাম না। আমাদের ট্যাগ করা হয়েছিল এবং সন্ত্রাসী ও মৌলবাদী হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছিল। এখন আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি, তা কখনোই ছিল না। রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।”

তাঁর আশা, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয়ভাবে স্মরণ ও স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

যারা একটু দেরি করে আসায় কেন্দ্রীয় পদযাত্রায় যোগ দিতে পারেননি, তারা প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় অবস্থান করেন এবং পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দুর্নীতি, অপরাধ ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

XS
SM
MD
LG