নতুন একটি আইন প্রণয়নের ফলে অস্ট্রেলিয়ান কর্মীরা এখন কাজের সময়ের বাইরে তাদের ঊর্ধ্বতনদের কল বা ইমেইল উপেক্ষা করতে পারবেন। এই আইনের অধীনে “সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অধিকার” নিশ্চিত করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে পাস হওয়া এবং সোমবার কার্যকর হওয়া আইনটি কর্মচারীদের কাজের সময়ের পরে তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে যোগাযোগে সাড়া দিতে অস্বীকার করার অধিকারকে সুরক্ষিত করে। ফ্রান্সসহ ২০টির বেশি দেশে একই ধরনের আইন করা হয়েছে।
লাখ লাখ অস্ট্রেলিয়ান এখন অফিস আওয়ারের পরে কল এবং ইমেইলের চাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রত্যেক অস্ট্রেলিয়ান কর্মী প্রতি সপ্তাহে ৫ দশমিক ৪ ঘণ্টা অবৈতনিক কাজ করে, যা কোটি কোটি ডলার মজুরির সমান।
অস্ট্রেলিয়ার কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নের সেক্রেটারি স্যালি ম্যাকম্যানাস সোমবার অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেন, নতুন আইনটি একটি ন্যায্য আইন।
ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো অবশ্য জোর দিয়ে বলেছে, “সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অধিকার” সংক্রান্ত আইনটি উৎপাদনশীলতা বাধাগ্রস্ত করতে পারে রবং এতে আমলাতন্ত্রে আরও স্তর যুক্ত হবে বলে অভিযোগ করেন তারা।
তবে কর্মচারীদের তাদের ঊর্ধ্বতনদের কাছ থেকে অফিস আওয়ারের বাইরে যোগাযোগে অস্বীকার করার কারণ অবশ্যই ‘যুক্তিসঙ্গত’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। এখানে যুক্তিসঙ্গত অর্থ কী তা পরিষ্কার নয়।
ব্রেন্ট ফার্গুসন অস্ট্রেলিয়ান ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপের একজন। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “কোনটি যুক্তিসঙ্গত বা কোনটি অযৌক্তিক তা পৃথক পৃথক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এবং এই অনিশ্চয়তা এই মুহূর্তে শিল্প যে সমস্যার সাথে লড়াই করছে তার একটি অংশ।”
এই আইন কেবল ১৫ জনের বেশি মানুষ কর্মরত এমন সংস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসার কর্মচারীরা এক বছর পর থেকে অফ আওয়ারের পর কল বা ইমেইল উপেক্ষা করতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং ওয়ার্ক ফ্রম হোম কর্মীদের কর্মসংস্থান ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যকার সীমারেখা ঝাপসা করে দিয়েছে।
তারা মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার “সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অধিকার” কর্মদিবসের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং লাখ লাখ কর্মচারীর অবসর সময় রক্ষার একটি প্রচেষ্টা।