শুক্রবার হোয়াইট হাউজের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মিশরে চলমান আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। ওদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ও ফিলিস্তিনি জঙ্গী সংগঠন হামাসের মধ্যে গাজায় তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কার্বি সাংবাদিকদের বলেন, “গঠনমূলক” আলোচনা হয়েছে এবং হামাসসহ সকল পক্ষকে এখন সমন্বিত হয়ে এই প্রস্তাবিত চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
কার্বি জানান, শুক্রবার সিআইএ পরিচালক বিল বার্নস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি ব্রেট ম্যাকগার্ক অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
এর আগে, শুক্রবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, দেশটির একটি প্রতিনিধিদল যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার আলোচনায় অংশ নিতে কায়রো অবস্থান করছে। আলোচনায় ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের প্রতিনিধি থাকলে হামাস এতে অংশ নিচ্ছে না।
সপ্তাহের শুরুর দিকে হামাস ইঙ্গিত দেয়, তারা এ সপ্তাহের আলোচনায় অংশ নেবে না, কারণ গত সপ্তাহে মধ্যস্থতাকারীরা যে তথাকথিত “সেতুবন্ধন চুক্তিতে” একমত হয়েছেন, তাতে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কিছু বাড়তি চাহিদার কথা বলা হয়েছে, যা সংগঠনটির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
কার্বি শুক্রবার জানান, আপত্তি থাকলেও, এ আলোচনায় হামাসের থাকা উচিত। “আমরাও কায়রোতে আছি, তারাও আছেন। আমরা চাই হামাস অংশগ্রহণ করুক এবং প্রয়োজনে ছোট-বড় সব ধরনের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে।” তিনি ইঙ্গিত দেন, এই সপ্তাহান্তে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবারও মধ্য গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। এপির রেকর্ড করা একটি ভিডিওতে পূর্বের দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে জনশূন্য সড়ক ও ভবন দেখা যায় এবং ট্যাংক থেকে শেলবর্ষণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জঙ্গী সংগঠন হামাস অতর্কিত হামলা চালায়। এই হামলায় ১,২০০ জন নিহত হন ও হামাসের হাতে ২৫০ জন জিম্মি হন। এই ঘটনার মাধ্যমে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, নিহতদের মধ্যে হাজার হাজার হামাস যোদ্ধা রয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার ২৩ লাখ জনগোষ্ঠীর তিন চতুর্থাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রায় সকলেই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি ও রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।)