বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার (২২ অগাস্ট) অভিযোগ করেছেন যে “ভারত কোন সতর্কবার্তা না দিয়েই বাঁধ খুলে” দিয়েছে, যেটাকে তিনি “অমানবিক আচরণ” বলেন বর্ণনা করেন।
গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি জেলায় ব্যাপক বন্যায় ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ পানিবন্দি হওয়ার পর তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মাদ নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ‘অসহযোগিতা’ করছে।
“কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কবার্তা ছাড়াই এবং আমাদের প্রস্তুতির কোনো সুযোগ না দিয়েই বাঁধটি খুলে দেওয়া হয়েছে,” ইসলামকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা ইউএনবি জানায়।
বিগত কয়েক সপ্তাহে ভারি বৃষ্টির কারণে সীমান্তের দুপাশেই ব্যাপক বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে অনেকে বন্যার ব্যাপকতার জন্য ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়াকে দায়ী করছে।
উপদেষ্টা ইসলাম অভিযোগ করেন যে, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে 'অমানবিক আচরণ' করছে এবং অসহযোগিতার পরিচয় দিয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
“আমরা দেখছি উজানের পানি আসছে এবং বন্যা সৃষ্টি করছে। ভারত অমানবিক আচরণ অসহযোগিতা দেখিয়েছে,” ইসল্যামকে উদ্ধৃত করে ঢাকার ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার জানায়।
ভারতের ব্যাখ্যা
তবে নয়া দিল্লি থেকে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর অববাহিকা এলাকায় গত কয়েকদিনে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাঁধ খুলে দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশে যা বলা হচ্ছে, তা তথ্যগতভাবে সঠিক নয় বলে ভারত জানায়।
ভারত বলছে, ডুম্বুর বাঁধের ভাটি অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের পানি বাংলাদেশে বন্যা সৃষ্টি করেছে।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আশা প্রকাশ করেন যে, ভারত ভবিষ্যতে “বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে এ’ধরনের নীতি থেকে বিরত থাকবে।”
“এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাংলাদেশ এবং ভারতের জনগণকে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, তার একটি সমাধান আমাদের খুঁজে বের করতে হবে,” ইসলামকে উদ্ধৃত করে দ্য ডেইলি স্টার জানায়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ৮ জেলায় বন্যায় ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ফেনী ও কুমিল্লায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।