ভিয়েতনামের নতুন নেতা তো লাম তার প্রথম বিদেশ সফরের গন্তব্য হিসেবে চীনকে বেছে নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বলিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার মাঝেও বৃহত্তম প্রতিবেশী রাষ্ট্র সফরের সিদ্ধান্তে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির চীন-ভিয়েতনাম দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি গুরুত্ব অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, আজ মেঘাচ্ছন্ন রবিবার সকালে ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে চেপে হংকংয়ের কাছে অবস্থিত চীনের প্রধান উৎপাদন ও রপ্তানিকেন্দ্র গুয়াংঝুতে অবতরণ করেন লাম।
তিন দিনের এই সফরে চীনের নেতা শি-জিনপিংয়ের সংগে দেখা করবেন তিনি। দুই সপ্তাহ আগেই লাম দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক পদ, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। লাম এনগুয়েন ফু ট্রং-এর স্থলাভিষিক্ত হলেন, যিনি তের বছর নেতৃত্ব দেওয়ার পর মারা যান।
মে মাস থেকেই তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন। তবে সেই পদটি মূলত আলঙ্কারিক।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক
ধারনা করা হচ্ছে, নতুন নেতা তার পূর্বসূরির চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করে চলার কৌশল অব্যাহত রাখবেন। চীনের ঝেংঝৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর ভিয়েতনাম স্টাডিজের পরিচালক ইউ শিয়াংডং শনিবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত লেখায় এ মন্তব্য করেন।
“লাম দায়িত্বভার গ্রহণের পর চীনকে তার প্রথম বিদেশ সফরের গন্তব্য হিসেবে বেছে নিয়ে এটাই ইঙ্গিত দিলেন যে ভিয়েতনাম, চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে অনেক গুরুত্ব দেয়, ” ইউ তার মতামত কলামে বলেন। “তবে একইসঙ্গে, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দেশটি কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল করবে না।”
গত বছর ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কৌশলগত অংশীদারিত্ব তৈরি করে, যেটি দেশটির কূটনৈতিক সম্পর্কের সর্বোচ্চ ধাপ। ভিয়েতনাম চীন ও ভারতের সঙ্গে একই ধরনের সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র জাপান ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট সরকারের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্ক আরও বলিষ্ঠ করেছে। যদিও ভিয়েতনাম যুদ্ধে এই সরকারের পূর্বসূরিরাই যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু ছিল। দেশ দুইটি চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও কৌশলগত লড়াইয়ে অংশীদার খোঁজার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।