সংক্রামক রোগ এমপক্সের (মাঙ্কিপক্স) জন্য বাংলাদেশে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে মধ্য আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে রোগটি।
ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, উগান্ডা ও কেনিয়ায় এ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ব্যথা, লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া এবং জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। শুক্রবার পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এমপক্সে আক্রান্ত একজন রোগী শনাক্ত করেছে। তবে এটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট কি না তা নির্ধারণের জন্য আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক অধিদপ্তরের উপপরিচালক দাউদ আদনান। তবে তিনি রোগের সংক্রামক প্রকৃতির কারণে সতর্ক থাকার উপর জোর দিয়েছেন।
আদনান ইউএনবিকে বলেন, "এমপক্স যাতে দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আমরা কার্যকরী ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিমানবন্দর, নৌপথ ও অন্যান্য প্রবেশ পয়েন্টগুলোতে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য নির্দেশিকা জারি করা হবে।"
এ রোগের লক্ষণগুলো অনুভব করলে বা সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বিশেষ করে ২১ দিনের মধ্যে আক্রান্ত কোনো দেশ ভ্রমণ করলে চিৎিসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জনসাধারণকে সহায়তার জন্য হেল্পলাইন ১৬২৬৩ বা ১০৬৫৫ নম্বরে এ যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারের দৃঢ় সংকল্পের কথা তুলে ধরে আদনান বলেন, "কেউ যাতে এমপক্স নিয়ে দেশে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
এমপক্স-কে জনস্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা ঘোষণা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বুধবার (১৪ অগাস্ট) এক বৈঠকে এমপক্স-কে জনস্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, এটি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয়।
চলতি বছরের শুরুতে বিজ্ঞানীরা এমপক্সের একটি রূপের সন্ধান পেয়েছিলেন বলে কথিত। মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের কারণে এই সংক্রামক রোগ হয়। এই ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে ১০ শতাংশ পর্যন্ত মানুষ প্রাণ হারাতে পারে। এমপক্সের নতুন রূপের উপসর্গ ২০২২ সালের প্রাদুর্ভাবের চেয়ে হালকা ও মৃদু।
এমপক্সের উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে বুক, যৌনাঙ্গ, হাত ও পায়ে ক্ষত, জ্বর এবং পেশীতে ব্যথা।
হু কর্মকর্তারা এমপক্সের বিস্তার রোধে সহায়তা করার জন্য জরুরি অবস্থার জন্য ব্যবহৃত তাদের ‘কন্টিনজেন্সি ফান্ড’ থেকে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার দিয়েছেন এবং ঘোষণা করেছেন যে, আগামী দিনে আরও অর্থ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
হু বিশেষজ্ঞরা এমপক্সের দুটি টিকার সুপারিশ করেছেন, তবে আর্থিক বাধা ও সরবরাহের সীমাবদ্ধতা এখনও একটা সমস্যা।