মঙ্গলবার তেহরান ও বৈরুতে ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও হেজবুল্লাহর দুই জ্যেষ্ঠ নেতা ইসরায়েলের হাতে নিহত হওয়ার পরও সংগঠন দুইটি পাল্টা হামলা চালানোর ক্ষেত্রে দ্বিধার মুখে পড়েছে। ভয়েস অফ আমেরিকাকে এমনটাই জানিয়েছেন এক সাবেক ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ইসরায়েলি রিজার্ভ বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্যাকব নাজেল বুধবার ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে দ্বিধার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। নাজেল ওয়াশিংটনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা গবেষণা সংস্থা ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিসের ইসরায়েল-ভিত্তিক সিনিয়র ফেলো।
ইসরায়েল জানিয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত লেবাননের জঙ্গি সংগঠন হেজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শোকরকে হত্যা করেছে। মঙ্গলবার বৈরুতের দক্ষিণে হেজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভবনে হামলা চালিয়ে শোকরকে হত্যা করা হয়। হেজবুল্লাহ এখনো বলেনি এই হামলায় শোকর নিহত হয়েছেন কী না।
কয়েক ঘণ্টা পর, জঙ্গি সংগঠন হামাসের বর্ণনা মতে, তেহরানে হামলা চালিয়ে সংগঠনের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো ইসরায়েলি সরকার বা সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি। হামাস ও ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বুধবার ইরানের রাজধানীর একটি বাসভবনে সূর্যোদয়ের ঠিক আগে পরিচালিত এই হামলার দায় দিয়েছে ইসরায়েলকে। তবে এ দাবির পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
নাজেলের সাক্ষাৎকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্পাদনার পর প্রকাশ করা হল।
ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনার ধারণা অনুযায়ী, কীভাবে ইরান এসব ঘটনার জবাব দেবে?
নাজেল: ইরান প্রতিশোধ নেবে। তারা সাধারণত হামাস বা হেজবুল্লাহকে এ ধরনের কাজে ব্যবহার করে।
হামাস প্রতিশোধ নিতে চাইবে। তবে (ইসরায়েলের সঙ্গে নয় মাস লড়ার পর) তাদের আর খুব একটা সক্ষমতা নেই। তারা তেল আবিবে মিসাইল ছুঁড়তে চাইলে তা পারবে।
তবে হেজবুল্লাহর বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন। তাদের অনেক ধরনের সক্ষমতা আছে। তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতকে পরের পর্যায়ে উন্নীত করবে কি না। তারা কী পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ চায় কী না? তারা যদি আমার ধারণা অনুযায়ী প্রতিশোধ নিতে চেষ্টা করে, তাহলে ইসরায়েলকেও সমুচিত জবাব দিতে হবে।
আমরা হামলা চালাতে পারি এমন অনেক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে লেবাননে। এবং আমরা এটাও দেখব কারা সবার শেষে পাল্টা জবাব দিতে এসেছে। সবার শেষে কে হামলা চালাল, সেটা অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়—ফলাফলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।