ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে, বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য দেয়া প্রশাসনের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবারের সহিংসতায় নিহত ৬ জনের জন্য বুধবার (১৭ জুলাই) গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন আন্দোলনকারীরা। এরপর বিকাল সোয়া চারটার দিকে তারা টিএসসি চত্বর অভিমুখে মিছিল বের করেন। এসময় পুলিশের দুটি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ফটকের কাছে পৌঁছালে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ শুরু করে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এর আগে, বুধবার বেলা ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের সবগুলো থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের বের করে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপর হলগুলোকে ‘ছাত্ররাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা করেন তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের সেই সিদ্ধান্ত বর্জন করে হলগুলোতে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মী ও কর্মকর্তাদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে পাল্টা নোটিশ দিয়েছেন তারা।
রাজধানীতে আহত ১৩
সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভ চলাকালে রাজধানী ঢাকায় শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশে হওয়া সংঘর্ষে তারা আহত হন।
আহতরা ব্যক্তিরা হলেন; মো. কাউসার (২০), মো. অলিউল্লাহ (২৭), মো. নাঈম (২৪), মো. সাইদুল ইসলাম (২৬), মো. ইকবাল হোসেন (৪০), মো. সোহান (২৮), লিমন (১৫), মিজান (২০), ফেরদৌস (৪০), আওয়ামী মহিলা লীগ কর্মী কবিতা (৪৫), নাসরিন (৪৮), রহিমা (৫০) ও কুমিল্লা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আইন কলেজের শিক্ষার্থী মো. নাদিম উদ্দিন খোকন (২৭)।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে শান্তি মোড় এলাকায় অবস্থান কর্মসূচিতে রূপ নেয়। এসময় তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে এবং কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করে।
এরপর, দুপুর ১২টার দিকে তারা সেখান থেকে সরে গিয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে।