বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান শেষে প্রধান ফটকের সামনের এলাকা ‘ক্রাইম সিন’ টেপ দিয়ে চিহ্নিত করে রেখেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (১৭ জুলাই) বিএনপি কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটও বাইরে থেকে তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
কার্যালয়ের আশপাশের ফুটপাতে পথচারীদের হাঁটতে দেয়া হচ্ছে না। কার্যালয় এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপি কার্যালয়ের একজন কর্মচারী জানান, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে পুলিশ তাদের তাড়িয়ে দিয়ে কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পরে অভিযান চালায়। তিনি আরো জানান, “এরপর থেকে আমরা ভেতরে ঢুকতে পারছি না, পুলিশ অফিসের সামনে ‘সিকিউরিটি টেপ’ লাগিয়ে দিয়েছে।”
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।
এমন পরিস্তিতিতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এর পর সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতিসহ গ্রেফতার ৭
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এসময় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে ডিবি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের কয়েক ঘণ্টা পর, রাত ১২টার দিকে বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালায় ডিবি। অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মো. হারুন-অর-রশীদ।
অভিযান শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডিবি প্রধান জানান, বিএনপি কার্যালয়ের শৌচাগার থেকে বেশ কিছু ককটেল ও বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রাবণসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, এর ধারাবাহিকতায় এই অভিযান চালানো হয়। যারা গুজব ছড়াচ্ছে, অর্থায়ন করছে, অপরাজনীতি করছে, তাদের সবার নাম আমরা পেয়েছি।”
একটি রাজনৈতিক দল শিক্ষার্থীদের রাজনীতি ও কোটাবিরোধী আন্দোলনে ব্যবহার করছে বলে দাবি করেন অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন-অর-রশীদ। বলেন, তাদের গ্রেফতারে ডিবি বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করেছে। তবে তাদের পরিচয় এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
রিজভীর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন
এদিকে, জরুরি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবে বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিএনপি কার্যালয়ে ডিবির অভিযানকে ‘নোংরা তামাশা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, “মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তারা মধ্যরাতে কাপুরুষের মতো আমাদের অফিসে ঢুকে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বা পুলিশি নিরাপত্তায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে বলে দাবি করেন রিজভী।
তিনি আরো বলেন, সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি অফিসে অভিযান চালিয়েছে।