অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

‘কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ দেয়ার অপচেষ্টা চলছে’, বললেন হাছান মাহমুদ


সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. হাছান মাহমুদ। ১৫ জুলাই, ২০২৪।
সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. হাছান মাহমুদ। ১৫ জুলাই, ২০২৪।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করে, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেয়ার অপচেষ্টা চলছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। “সরকার কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে দেবে না;” যোগ করেন হাছান মাহমুদ।

হাছান মাহমুদ আরো জানান রবিবার (১৪ জুলাই) রাতে কোটা আন্দোলন থেকে রাষ্ট্রবিরোধী শ্লোগান দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সেই দেশে রাজাকারের পক্ষে শ্লোগান দেয়া রাষ্ট্রবিরোধী।

“সেখানে সরকারবিরোধী, প্রধানমন্ত্রীবিরোধী শ্লোগান দেয়া হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় যে, কোটা আন্দোলনে রাজনৈতিক অপশক্তি ঢুকেছে। বিএনপি-জামাতসহ যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তারা ঢুকেছে এবং তাদের প্ল্যান্টেড কিছু মানুষ এর নেতৃত্ব দিচ্ছে;” হাছান মাহমুদ আরো বলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ শ্লোগান ও বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে এটা কোটাবিরোধী আন্দোলন নয়। “এটিকে রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেয়ার অপচেষ্টা চলছে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু নেতা, বিএনপি-জামায়াত ও অন্যরা সেখানে ইন্ধন দিচ্ছে,” তিনি আরো বলেন।

এ বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আদালতে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তি করার পর যে নির্দেশনা দেবে, সরকারকে সেভাবে কাজ করতে হবে। যারা আইন, সংবিধান জানেন, তারা সবাই এটি বোঝেন। তারপরও এই আন্দোলন চলছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের সরকার অনেক শক্তিশালী সরকার। কোনো রাজনৈতিক অপশক্তিকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে নিয়ে খেলা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেয়া হবে না।”

মির্জা আব্বাস: ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি’

এর আগে, গত ১৩ জুলাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন যে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করছে। “কোটা সংস্কার আন্দোলন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি;” আরো বলেন তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপির কথা বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন অন্যদিকে নেয়ার সুযোগ নেই। এটা তাদের (সরকার) অপকৌশল ছাড়া কিছুই নয়। মূলত কোটা আন্দোলনকে জড়িয়ে সরকার ভিন্ন কিছু করার পাঁয়তারা করছে।”

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (ফাইল ছবি)
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (ফাইল ছবি)

কোটা সংস্কার আন্দোলন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি বলে উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নামিয়ে সরকার অন্য কোনো অপকৌশলে বা দেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করছে কিনা, আমরা সেই আশঙ্কা করছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। এই অপশাসন থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অতীতে বিএনপির কোনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। সরকার বিএনপির আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে শত শত নেতাকর্মী-কে জেলে পাঠিয়েছে। তারপরও বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে আছে। এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থেকে আন্দোলন করবে।

XS
SM
MD
LG