বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। রবিবার (১৪ জুলাই) এ কথা জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এখনো চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে সিসিইউ সুবিধা যুক্ত একটি কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন। তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।”
ইতোমধ্যেই হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে চিকিৎসা দিচ্ছেন; জানান তিনি।
গত ৮ জুলাই খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর ছয় দিন আগে একই হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছিলো। এর আগে, গত ২২ জুন রাতে খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তার হৃদযন্ত্রে সফলভাবে পেসমেকার বসানো হয়।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভোগছেন।
গত ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। সেই বছরই, আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তার গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশত্যাগ না করার শর্তে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর থেকে তাকে কারাগারের বাইরে থাকার মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে।