ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের সফরে সোমবার রাশিয়ায় পৌঁছেছেন পারস্পরিক সম্পর্ক জোরালো করার উদ্দেশ্যে। মস্কো যখন নয়াদিল্লির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করেছে তখন মোদির এই সফর।
নয়াদিল্লির বিশ্লেষকরা বলছেন, মঙ্গলবার হতে চলা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক কার্যত এক প্রকার বদ্ধমূল ধারণা ঠেকাতে ও মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে। কী এই ধারণা? ভারত তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে সরে এসেছে। এমন ধারণা গড়ে ওঠার কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে ভারত।
কলিঙ্গ ইন্সটিটিউট অফ ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা চিন্তামণি মহাপাত্র ভিওএ-কে বলেন, “ভারতের লক্ষ্য হল, ইন্দো-রাশিয়া সম্পর্ক যে গুরুত্বপূর্ণ তাতে জোর দেওয়া এবং চীনের সঙ্গে পুতিনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক যাতে নয়াদিল্লিকে আক্রান্ত না করে তা সুনিশ্চিত করা।”
তিনি যোগ করেন, “রাশিয়ার সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা জারি রাখার জন্যই এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর এটাই প্রথম ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার শীর্ষ সম্মেলন। উল্লেখ্য, এই বিষয়ে নয়াদিল্লি নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে। নয়াদিল্লি এই যুদ্ধকে নিন্দা করেনি বা মস্কোর উপর চাপানো পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞাতেও যোগ দেয়নি।
যদিও ২০০০ সাল থেকে ভারত ও রুশ নেতারা বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করে আসছেন। তবে, ২০২১ সালে পুতিনের নয়াদিল্লি সফরের পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
এই শীর্ষ সম্মেলনকে “কিছু ঘটার অপেক্ষা” বলে অভিহিত করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়ম জয়শঙ্কর জোর দিয়েছেন, দুই দেশের “এক সঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচ বছরে মোদির প্রথম রাশিয়া সফরে নজর থাকবে সময়োত্তীর্ণ সম্পর্ককে মজবুত করা।
তারা আরও বলছেন, পুতিনের কাছে এই সফরের গুরুত্ব অপরিসীম কেননা তিনি বোঝাতে চান যে, পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার ফলে তিনি একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েননি। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে চলা নেটো শীর্ষ সম্মেলনের নজর ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল। কিছু বিশ্লেষকের মতে, মোদির সঙ্গে পুতিনের বৈঠক এই আবহেই আয়োজিত হচ্ছে এবং সেদিকে নজরও থাকবে।
রাশিয়ার টাস সংবাদ সংস্থা শনিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রাশিয়া প্রধানমন্ত্রী মোদির “ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ সফর” প্রত্যাশা করছে যা “ইন্দো-রুশ সম্পর্কের জন্য খুবই জরুরি।”