অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল: '৬ মাস পরপর খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো সরকারের একটা খেলা'


এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি।
এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস পরপর বাড়ানোর বিষয়টি তাঁর কারাবাস দীর্ঘায়িত করতে এবং তাঁর ভাগ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সরকারের একটি সুপরিকল্পিত খেলা বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া দুই বছরের বেশি সময় একটি জরাজীর্ণ ও নির্জন কারাগারে কাটিয়েছেন। এরপর তাঁকে পিজি হাসপাতালে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তিনি কোনো চিকিৎসা পাননি... অবশেষে সাজা স্থগিত করে তাঁকে বাসায় পাঠানো হয়। এখানে আরও একটি কৌশল রয়েছে।”

এর ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ছয় মাস পরপর সাজা স্থগিত করায় খালেদা জিয়ার সাজা কমছে না।

তিনি বলেন, “যখন তারা প্রয়োজন মনে করবে তখন সাজা পুনর্বহাল করা হবে। এটা আরেকটা কূটকৌশল। এর অর্থ কারাদণ্ড আরও দীর্ঘায়িত করা।”

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে বক্তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে এবং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

রাজনৈতিক কারণে, আইনের অপব্যবহার করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, “প্রতিদিন মৃত্যুর বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াই করতে হয় তাঁকে।”

সামগ্রিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া অভিন্ন ও অবিচ্ছেদ্য। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারলে গণতন্ত্রও পুনরুদ্ধার করতে পারব।”

তিনি খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির জন্য আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ এবং তাঁর অনৈতিক কারাবাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সর্বস্তরের জনগণকে আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ: খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন, এর দায় সরকারের নয়

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন, সেখানে চিকিৎসা সেবার বিষয়ে দায় সরকারের নয়।

এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ২৭ জুন, ২০২৪।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ২৭ জুন, ২০২৪।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

বেগম জিয়ার অসুস্থতায় রিজভীও ফখরুলের মতো কেঁদেছেন কি না' প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতাল সরকারি নয়, বেসরকারি। সেখানে চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের কোনো দায় নেই। তারা যদি অ্যাম্বুলেন্স, ইনজেকশন না দিয়ে থাকে সে বিষয়ে তারাই বলতে পারবে।

এ সময় বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ তো রয়েছেই। শুধু ভারত নয়, নেপাল, ভুটানসহ আঞ্চলিক কানেকটিভিটি'র জন্য কাজ চলছে। আর আমাদের সঙ্গে ভারতের নানা অঞ্চলের যোগাযোগ বহুদিন ধরে। ১৯৬৫ সালের পরে অনেক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সেগুলো আবার চালু করা হচ্ছে।

ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানে চলাচল সম্ভব হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের ওপর দিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করেছি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরে সে দেশের ওপর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে মালামাল পরিবহন বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের বন্দী বিনিময় চুক্তি নেই, সেটি একটি প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত অভিযুক্ত হিসেবে তাঁকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

XS
SM
MD
LG