ইরানে কারাবন্দি নোবেলজয়ী নার্গিস মহম্মদীর আইনজীবী বুধবার বলেছেন, সক্রিয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য নার্গিসের কারাদণ্ডের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
মহম্মদীর আইনজীবী মোস্তাফা নিলি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, তার মক্কেলকে সরকার-বিরোধী অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে সাজা দেওয়া হয়েছে। নিলি আরও বলেন, ইরানের সাম্প্রতিক সংসদীয় নির্বাচন বয়কট করতে ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছিলেন মহম্মদী। সেই সঙ্গে ইউরোপে আইনপ্রণেতাদের চিঠি পাঠিয়েছিলেন এবং আরও এক ইরানি সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীকে কীভাবে নির্যাতন ও যৌন হয়রানি করা হয়েছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এরপরই তাকে এই সাজা দেওয়া হয়।
মহম্মদীকে ইরানের কুখ্যাত এভিন জেলে বন্দি করে রাখা হচ্ছে। এই জেলে রাজনৈতিক বন্দি ও পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিদের আটকে রাখা হয়। মহম্মদী ইতোমধ্যেই ৩০ মাস জেল খেটেছেন। জানুয়ারি মাসে আরও ১৫ মাস কারাবন্দি থাকার রায় দেওয়া হয়েছে। ইরানের সরকার তার বাড়তি সাজার বিষয়কে স্বীকার করেনি।
মহম্মদীর বিরুদ্ধে সরকারের কয়েক দশকব্যাপী হয়রানির মধ্যেও তার সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য গত অক্টোবরে তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে বলে ইরানের ধর্মগুরুরা ক্ষুব্ধ এবং এই রায় সেই ক্ষোভেরই প্রতিফলন।
মহম্মদী উনিশতম নারী হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এবং ২০০৩ সালে মানবাধিকার কর্মী শিরিন ইবাদির পর তিনিই দ্বিতীয় নারী হিসেবে এই সম্মান অর্জন করেছেন। ইরানের প্রশাসন কর্তৃক বহুবার গ্রেফতারি ও অনেক বছর কারাবন্দি থাকা সত্ত্বেও ৫২ বছর বয়সী মহম্মদী তার সামাজিক ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে গেছেন।
স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা এবং সে দেশে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরুদ্ধে সহবন্দিদের সঙ্গে মহম্মদী নভেম্বরে অনশন ধর্মঘট করেছিলেন।
২০২২ সালে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর পর ইরানে নারীদের নেতৃত্বে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনের আলোকবর্তিকা ছিলেন মহম্মদী। সেই বিক্ষোভ ইরানের ধর্মতান্ত্রিক সরকারের কাছে অন্যতম তীব্র চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। কর্তৃপক্ষের মনগড়া বাধ্যতামূলক হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনিকে আটক করা হয়েছিল।