ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে, দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী ২১ জুন দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২২ জুন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনায় থাকতে পারে প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর, এটি হবে কোনো সরকার প্রধানের ভারতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে, ভারতের রাজধানীতে এটি হবে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর। গত ৯ জুন মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনার আসন্ন সফরের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে; আন্তঃসীমান্ত সংযোগ উদ্যোগ, তিস্তা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ, মোংলা বন্দরের ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ বাণিজ্য। এছাড়া একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
গত এক দশকে শক্তিশালী আঞ্চলিক অংশীদারত্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২২ জুন অনুষ্ঠেয় হাসিনা-মোদী শীর্ষ বৈঠকে, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব বাড়ানোর বিষয়টি আসতে পারে। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়ার প্রস্তাব দিলেও,এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট শুক্রবার (২১ জুন) দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। সেখানে ভারতের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন।
শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে, সফরকালীন বাসস্থান হোটেল তাজ প্যালেস-এর সভাকক্ষে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। শনিবার (২২ জুন) সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হবে। এ সময় তাকে গার্ড অফ অনার দেয়ার কথা রয়েছে।
এরপর শেখ হাসিনা রাজ ঘাটে গিয়ে,মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে হায়দ্রাবাদ হাউসে মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।
পরবর্তীতে সংবাদ বিবৃতি দেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা এবং আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ।
শনিবার বিকেলে, ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
শনিবার (২২ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে রাত ৯টায় ঢাকায় অবতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।