পশ্চিম মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে হাজার হাজার মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা আটকে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে একটি উপকূলীয় শহরে সামরিক জান্তার অবস্থানের দিকে এক শক্তিশালী সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী অগ্রসর হচ্ছে।
মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসনের জন্য যুদ্ধরত আরাকান আর্মি রবিবার বিকালে বলেছে, মূলত রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত মংডু শহরের বাসিন্দাদের রাত ৯টার মধ্যে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত। শহরের উপর তাদের পরিকল্পিত হামলার আগে এই নির্দেশ দেয়া হয়।
মংডুতে আরাকান আর্মির আক্রমণ মিয়ানমারে জান্তার বিরুদ্ধে কয়েক মাসব্যাপী চলা বিদ্রোহীদের অভিযানের সর্বসাম্প্রতিক হামলা। জান্তা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। এখন দেশের বৃহত্তর অংশজুড়ে তাদের অবস্থান ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে।
আরাকান আর্মি এক বিবৃতিতে বলেছে, জান্তার “অবশিষ্ট ঘাঁটিগুলিতে আমরা হামলা করতে চলেছি।” পাশাপাশি বাসিন্দাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য মংডু’র সামরিক ঘাঁটিগুলি থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।
এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য কল করা হলে জান্তার মুখপাত্র উত্তর দেননি।
আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ
মিয়ানমারের জান্তা-বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক উপমন্ত্রী আউং কিয়াও মোয়ে বলেন, লড়াই নিকটবর্তী হওয়ায় মংডুতে বসবাসকারী প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা আটকে পড়েছে।
তিনি রয়টার্সকে বলেন, “তাদের পালানোর কোনও জায়গা নেই।”
গত মাসে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা চলমান সংঘাত থেকে নিরাপত্তার জন্য প্রতিবেশী বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে যায়। তবে আর কোন শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ আগ্রহী নয়।
মংডু’র প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বে বুথিডং শহরে ও তার আশেপাশে যুদ্ধের কারণে রোহিঙ্গাদের পলায়ণ শুরু হয়। তীব্র সংঘাতের পর বুথিডং শহর দখল করে আরাকান আর্মি। লড়াইয়ের সময় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে যে তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
আরাকান আর্মি এই অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
রোহিঙ্গারা বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু মিয়ানমারে কয়েক দশক ধরে নির্যাতনের শিকার। রাখাইনে ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে হামলার পর প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বাস করছে।