জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ বৃহস্পতিবার বলেছেন তালিবানের উচিত্ আফগানিস্তানে প্রায় দুই বছর ধরে বন্দি আমেরিকান রায়ান করবেটকে অবিলম্বে চিকিত্সা করানো যাতে তার স্বাস্থ্যের কোন অপূরনীয় ক্ষতি না হয় কিংবা এমনকী তিনি মৃত্যুমুখে পতিত না হন।
নির্যাতন ও অন্যান্য অত্যাচার , অমানবিক আচরণ কিংবা অন্যান্য অপমানজনক শাস্তি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপটিয়ার অ্যালিস জিল এডওয়ার্ডস বলেন, “ তালিবানকে অনতিবিলম্বে একটি অসামরিক হাসপাতালে রায়ান করবেটের চিকিত্সা করাতে হবে।
তিনি বলেন,ত্রাণকর্মী করবেটকে কোন অভিযোগ ছাড়াই এমন এক পরিবেশে আটক রাখা হয়েছে যা , “ সম্পূর্ণ অপর্যাপ্ত এবং আন্তর্জাতিক মানের অনেক নীচে”।
এডওয়ার্ডস আরও বলেন, “ এর ফলে তার দ্রুত ক্রম অবনিতশীল শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর উল্লেখযোগ্যপ্রভাব পড়ছে”। তিনি বলেন তার এ বিষয়টি সরাসরি তালিবানকে জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “ পর্যাপ্ত চিকিত্সা ছাড়া তিনি অপূরনীয় ক্ষতি এমনকী মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন”।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনের পক্ষে একজন মুখপাত্র জানান, যুক্তরাষ্ট্র এডওয়ার্ডসের দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে এবং তালিবানের হাতে বন্দি করবেট ও অন্যান্যদের প্রতি মানবিক আচরণের যে আহ্বান এডওয়ার্ডসের দপ্তর জানিয়েছে তাকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়।
মুখপাত্রটি বলেন, “আমরা মনে করি রায়ানের আটক একটি ভুল কাজ এবং তার অবিলম্বে মুক্তি নিশ্চিত করতে আমরা অব্যাহত ভাবে কাজ করে যাবো”।
করবেট ও তার পরিবার ২০১০ সালে আফগানিস্তানে যান। তিনি বেসরকারি সংস্থাগুলিতে কাজ করেন এবং তার পর পরামর্শ দান , মাইক্রোফাইনান্স এবং প্রকল্প মূল্যানের মাধমে দেশটির বেসরকারী খাতকে চাঙ্গা করে তুলতে ব্লুম আফগানিস্তান নামে নিজের ব্যবসা শুরু করেন।
২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতা নেয়ার পর তিনি আফগানিস্তান ছেড়ে চলে আসেন কিন্তু তাঁর সংগঠনের সঙ্গে কাজ করতে থাকেন এবং তিনি তাঁর ব্যবসায়িক ভিসা নবায়নের জন্য ২০২২ সালে আবার আফগানিস্তানে ফিরে যান।
তাঁর আইনজীবি বলেন,তাঁর বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও ২০২২ সালের আগস্টে যখন তিনি তাঁর দপ্তরের কর্মীদের বেতন ও প্রশিক্ষণ দিতে যান তখন তাঁকে তালিবান গ্রেপ্তার করে। করবেটের সঙ্গে এক জন জার্মান ও দু জন আফগানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কিন্তু পরে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়।
জাতিসংঘের ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, করবেটের নানান রকমের স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে যার মধ্যে রয়েছে কানে শব্দ বাজা আর তার ওজনও ক্রমশই কমে আসছে। তিনি বার বার নিজের ক্ষতি করার এবং আত্মহত্যা করার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন।
২০২১ সালের আগস্টে তালিবানের কাছে পরাস্ত হবার পর যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে ফিরে আসার পর থেকে কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের কোন কুটনৈতিক উপস্থিতি নেই।