বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ অংশে মিয়ানমারের সীমান্তে গোলাগুলি অস্থিরতা কারণে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সঙ্গে বিগত কয়েক দিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে করে সেখান বসবাসরত প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তাহীনতাসহ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে। সংকটে থাকা দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে একটি জাহাজ কক্সবাজার থেকে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ মে) কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের উদ্দেশ্য রওয়না এমবি বার আউলিয়া নামে জাহাজটি। এতে সরকারি অনুদানের ৭৫ জন চাল, বিজিবি-কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন বাহিনীর রেশনের পণ্য সামগ্রী এবং ব্যবসায়ীদের পণ্য রয়েছে।
এমবি বার আউলিয়ার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বাহাদুর হোসাইন ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, "(বাংলাদেশ সময়) রাত ১১ টা ২০মিনিটে নিরাপদে জাহাজটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঘাটে পৌঁছায়।" এরপর জাহাজ থেকে মালামাল নামানো শুরু হয়।।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “দ্বীপে স্থায়ীভাবে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বসবাস করে। গত কিছুদিন ধরে মিয়ারমার সীমান্তে গোলাগুলির কারণে তারা খুব বিপদে আছেন। মিয়ারমার থেকে অনেক গুলি বাংলাদেশেও এসেছে। যার কারণে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। জেলেদের কোন আয়ও নেই।”
তিনি আরও বলেন, “গত ৬ থেকে অনেকটা দ্বীপের সঙ্গে নৌ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সেখানে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা গত কয়েকদিন শুধু তরকারি বিহীন ভাত খেয়ে আছে। আজ সেখানে খাদ্যপণ্য নিয়ে একটি জাহাজ যাবে। জাহাজে ব্যবসায়ীদের পণ্যের পাশাপাশি সরকারি অনুদানের ৭৫ জন চাল, বিভিন্ন বাহিনীর রেশন রয়েছে।”
“বর্তমানে মিয়ারমার সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে”- বলেও জানানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, “এখন পরিস্থিতি ভালো আছে। কিছুটা শান্তি বিরাজ করছে। তাই আজকে জাহাজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
“বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে”- বলে উল্লেখ তিনি বলেন,“ গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমার সীমান্তে অস্থিরতা চলছে। সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। থেমে-থেমে দীর্ঘদিন চলছে অস্থিরতা। এই সময়ে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে কয়েকজন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছে। তাই এখন পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও যে কোনও সময় আবার অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।”
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন,“ব্যবসায়ীরা তাদের মামলাল নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া জেলেদের সরকারি অনুদানের কিছু চাল আছে। এখন জাহাজ ফেরার সময় সেখান থেকে কেউ আসতে চাইলে আসবে। তবে, সরকারির উদ্যোগে সেখান থেকে কাউকে আনা হচ্ছে না। কাউকে আনার মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়নি।”
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সঙ্গে কতদিন নৌ যোগাযোগ বন্ধ ছিলো জানতে চাইলে শাহীন ইমরান বলেন, “এটা বলা কঠিন। তবে, ঝুকি নিয়ে গতকালও মানুষ যাতায়াত করেছে সমুদ্র পথে। “