অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কংগ্রেসে অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব স্থগিত থাকায় জেলেন্সকির কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন বাইডেন


ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি প্যারিসে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বক্তব্য রাখছেন। ফটোঃ ৭ জুন, ২০২৪।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি প্যারিসে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বক্তব্য রাখছেন। ফটোঃ ৭ জুন, ২০২৪।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন কারণ কংগ্রেসে স্থগিতাদেশ থাকায় কয়েক মাস ধরে আমেরিকা সে দেশকে সামরিক সাহায্য দিতে পারেনি যার ফলে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে লাভবান হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিদলীয় সমর্থনের আবেদন করেছিলেন “যেমনটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঘটেছিল।”

নরম্যান্ডিতে ডি-ডে অবতরণের ৮০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উভয় দেশ যোগ দেওয়ার একদিন পর প্যারিসে ভাষণ দিতে গিয়ে বাইডেন বাড়তি সাহায্য দেওয়া হবে কিনা সে সম্পর্কে কিছু না জানানোর জন্য ইউক্রেনের জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এদিকে, কংগ্রেসে রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা ইউক্রেনের জন্য ৬১ হাজার কোটি ডলার ত্রাণ প্যাকেজ ছয় মাস ধরে আটকে রাখেন।

ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট তারপরও জোর দিয়ে বলেন, আমেরিকার জনগণ ইউক্রেনের পাশে দীর্ঘদিন ধরে ছিল। তিনি আরও বলেন, “আমরা এখনও রয়েছি। সম্পূর্ণভাবে। সার্বিকভাবে।”

এই ক্ষমাপ্রার্থনা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা বিষয়ে বাইডেনের সমস্ত আলোচনাকে এড়িয়ে যাওয়া, কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের বিরোধিতা ও আমেরিকার রাজনীতিতে এক বিচ্ছিন্নতাবাদী চাপ যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে সুবিধা করে দিয়েছে।

জেলেন্সকি রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে তার দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সাহায্য করতে আমেরিকার সকল জনগণের কাছে আবেদন করেছেন। অস্ত্র বিষয়ক প্যাকেজকে অনুমোদন দিতে শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আইনপ্রণেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে রাশিয়ার অগ্রগতিকে রোধ করার ক্ষেত্রে এই প্যাকেজ ইউক্রেনকে সাহায্য করেছে।

জেলেন্সকি বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই ঐক্যে যুক্তরাষ্ট্র, আমেরিকার সকল জনগণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ের মতো ইউক্রেনের পাশে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মানুষের জীবন বাঁচাতে, ইউরোপকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আপনাদের ধারাবাহিকভাবে সমর্থন করে যাওয়ার উপর আমরা নির্ভর করি।”

বাইডেন শুক্রবার ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ২২.৫ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য পাঠাবে ইউক্রেনে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার বলেছেন, সর্বসাম্প্রতিক এই প্যাকেজে রয়েছে হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম বা এইচএমএআরএস-এর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, মর্টার সিস্টেম ও কয়েক রাউন্ড কামানের একটি বহর।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ক্রেমলিন। তারা সতর্ক করেছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বৃহত্তম এই সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

ইতোমধ্যে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বৃহস্পতিবার বিকালে ঘোষণা করেন ফ্রান্স ইউক্রেনকে তাদের মিরেজ যুদ্ধবিমান দেবে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্রান্স ও ইউক্রেন দশ বছরের জন্য দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তার পর থেকে জেলেন্সকি ইউরোপের অনেক দেশের সঙ্গে একই ধরণের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।

XS
SM
MD
LG