জাতিসংঘের শরণার্থী প্রধান বৃহস্পতিবার বলেন, যুদ্ধ, সহিংসতা এবং নির্যাতনের বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যূত মানুষর সংখ্যা ১১ কোটি ৪০ লক্ষে দাঁড়িয়ছে ্বং তা ক্রমশই বাড়ছে কারণ রাষ্ট্রগুলি সংঘাতর কারণ সামলাত ব্যর্থ হয়েছে এবং সংঘর্ষশীল পক্ষগুলি আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
কড়া এক বক্তব্যে ফিলিপিনো গ্র্যান্ডি গাজা,ইউক্রেন এবং সুদান থেকে কঙ্গো,মিয়ানমারএবং অন্যান্য জায়গায় সংঘাত নিরসনে নিজ ক্ষমতা ব্যবহারে ব্যর্থতার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সমালোচনা করেন। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্ব হচ্ছে এই নিরাপত্তা পরিষদের।
তিনি কোন দেশের নাম প্রকাশ না করেই “দূরদৃষ্টিহীন পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, প্রায়শই দ্বিমুখি মনোভাব একদিকে মুখে বলছে আইন মেনে চলার কথা তবে তা বহাল রাখার জন্য, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য কিছুই করছে না”।
গ্র্যান্ডি বলেন আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে না চলার মানে হচ্ছে , “ সংঘাতের পক্ষগুলি- ক্রমবর্ধমান হারে সর্বত্র, প্রায় সকলেই যুদ্ধের নীতিমালা মান্য করা বন্ধ করে দিয়েছে যদিও কেউ কেউ সেটা মেনে চলছে বলে ভান করে”।
তিনি বলেন,আর এর ফলে অসামরিক লোকের মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যৌন সহিংসতাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোর উপর আক্রমণ চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করছে এবং মানবিক কর্মীরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
নিজেকে একজন হতাশ মানবিক কর্মী হিসেবে অভিহিত করে এবং নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যকে সরাসরি উদ্দেশ করে তিনি বলেন তারা নিজেদের কন্ঠ ব্যবহার না করে . “ এই পরিষদের বেসুরো কন্ঠের মানে হচ্ছে যে আপনি যেন বিশ্বব্যাপী ব্যাপক ও বিশৃঙ্খল বেসুরো কন্ঠেরই প্রতিধ্বণি তুলছেন।
শরণার্থীদের এই হাই কমিশনার নিরাপত্তা পরিষদের বলেন গাজা, ইউক্রেন, সুদান এবং অন্যান্য স্থানের সংঘাতে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য বড্ড বেশি দেরি হয়ে গেছে”।
গ্র্যান্ডি বলেন, “তবে এখনও যে সব সংকট ও সংঘাতের কোন নিস্পত্তি হয়নি সে সব দিকে নজর দেয়ার সময় এখনও আছে যাতে করে সেগুলো যেন আরও লালিত হয়ে বিস্ফোরণ যেন না ঘটায়। এখনও সেই লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য সহায়তা বাড়িয়ে তোলার জন্য দেরি হয়ে যায়নি যাতে বাস্তুচ্যূত মানুষদের স্বেচ্ছায় নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে বাড়ি ফিরিয়ে আনা যায়।
তবে নিরাপত্তা পরিষদে ক্রমবর্ধমান হারে মেরুকরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভেটো প্রদানের ক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচটি স্থায়ী সদস্য নিজেদের মধ্যেই বিভক্ত। একদিকে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স অপর দিকে বিপরীত মনোভাব নিয়ে রাশিয়া ও চীন।
গাজা যুদ্ধের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদ অস্ত্র বিরতির কোন আহ্বান জানাতে পারেনি কারণ ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ‘এর বিরোধীতা করে আর ঠিক একই কারণে ইউক্রেনের বিষয়ে কোন নিস্পত্তি হচ্ছে না কারণ একটি মূল পক্ষ রাশিয়া যে কোন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দেবে।
গ্র্যান্ডি বলেন লোকজনকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করাসহ আন্তর্জাতিক আইনের এই সব লংঘন বিশ্বজুড়ে এক ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন উদাহরণস্বরূপ অক্টোবরের পর থেকে লড়াই ১৫ লক্ষেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে এবং সবমিলিয়ে তিরিশ লক্ষেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে , অনেকেই প্রতিবেশি দেশগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছে।
ফাইল- জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি দ্য এসোসিয়েটেড প্রেসের সঙ্গে কথা বলছেন। নাইরোবি, কেনিয়া। ৫ ফেব্রুয়ারি,২০২৪।