ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ধারণা করছেন যে রাশিয়া উত্তর-পূর্বে তার আক্রমণ আরও জোরদার করবে এবং মিত্রদের কাছে আরও বিমান প্রতিরক্ষা এবং ফাইটার জেট এমনকী যুদ্ধক্ষেত্রেও পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
এএফপি-এর সাথে একান্ত সাক্ষাত্কারে, জেলেন্সকি বলেন, গত সপ্তাহে খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার অতর্কিত আক্রমণের পর থেকে সীমান্ত-রেখা রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে বিমান প্রতিরক্ষার মাত্র এক চতুর্থাংশ রয়েছে।
জেলেন্সকি বলেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা শত্রু বাহিনীকে আটকাতে সক্ষম হয়েছে যারা ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে ভূখণ্ডের ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার (৩ থেকে ৬ মাইল) অভ্যন্তর পর্যন্ত চলে এসেছিল। তবে তিনি সতর্ক করেন যে এই সৈন্যরা রাশিয়ার একটি ব্যাপক আক্রমণের "প্রথম দফা" হতে পারে।
জেলেন্সকি বলেন, খারকিভ অঞ্চলের পরিস্থিতি "নিয়ন্ত্রণে" এসেছে কিন্তু "স্থিতিশীল নয়।"
তিনি বলেন,"আজ, ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য আমাদের যা প্রয়োজন তার প্রায় ২৫ শতাংশ আমাদের কাছে রয়েছে। আমি বিমান প্রতিরক্ষার কথা বলছি," ।
জেলেন্সকি এএফপিকে বলেন, রাশিয়ার সাথে বিমান সমতা অর্জনের জন্য ইউক্রেনের ১২০ থেকে ১৩০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বা অন্যান্য উন্নত বিমানের প্রয়োজন।
রাশিয়ার অগ্রগতি
অপরদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, তারা খারকিভ অঞ্চলের ভোভচানস্কের কাছে একটি গ্রাম দখল করেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলে,"উত্তরাঞ্চলের সৈন্যের ইউনিটগুলি খারকিভ অঞ্চলের স্টারিতজা গ্রাম মুক্ত করেছে এবং শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষার অভ্যন্তরে অগ্রসর হতে চলেছে"।
খারকিভের গভর্নর ওলেহ সিনিয়েহুবভ শনিবার বলেন, গত ১০ মে থেকে রাশিয়ার স্থল হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ অঞ্চলে প্রায় ১০,০০০ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
তিনি বলেন, ভোভচানস্ক শহরে মাত্র ১০০ জন লোক রয়েছে, যেখানে "প্রচন্ড যুদ্ধ" চলছে।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ৫ কিলোমিটার (৩ মাইল) দূরে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত শহর ভোভচানস্ক থেকে প্রায় ৮,০০০ জন বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে।
রুশ বাহিনী ৯ থেকে ১৫ মে এর মধ্যে ২৭৮ বর্গ কিলোমিটার (প্রায় ১০৭ বর্গ মাইল) এলাকা
নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার থেকে তথ্য ব্যবহার করে এএফপি অনুসারে, এটি ২০২২ সালের শেষের পর থেকে তাদের সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক অর্জন।
পুতিনের উদ্দেশ্য
চীন সফরের সময়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার বলেন, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ অঞ্চলে মস্কোর আক্রমণ ছিল সীমান্ত অঞ্চলে ইউক্রেনের গোলাবর্ষণের প্রতিক্রিয়া।
পুতিন বলেন, তিনি ইউক্রেনীয় হামলার বিরুদ্ধে একটি বাফার জোন তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছেন। তবে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, খারকিভ শহর দখল করার কোনও পরিকল্পনা নেই মস্কোর।
তিনি বলেন,“আমি প্রকাশ্যে বলেছি যে এমন চলতে থাকলে, আমরা একটি নিরাপত্তা জোন, একটি স্যানিটারি জোন তৈরি করতে বাধ্য হব, এটাই আমরা করছি।”
তিনি বলেন রুশ সৈন্যরা “পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিদিন অগ্রসর হচ্ছে," ।