অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৫টি দেশ বিদেশী আশ্রয়প্রার্থীদের তৃতীয় দেশে পাঠানোর পরিকল্পনা দাবি করছে


ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে ক্যালের এক রেলস্টেশনে ট্রেনে উঠতে অভিবাসন-প্রত্যাশীদের বাধা দিচ্ছে ফরাসি পুলিশ। ফাইল ফটোঃ ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে ক্যালের এক রেলস্টেশনে ট্রেনে উঠতে অভিবাসন-প্রত্যাশীদের বাধা দিচ্ছে ফরাসি পুলিশ। ফাইল ফটোঃ ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ১৫টি দেশ শরণার্থী বা বিদেশী নাগরিকদের আশ্রয়দান নীতিকে আরও কঠোর করার দাবি তুলেছে যাতে সমুদ্রে উদ্ধারকৃত ব্যক্তিসহ অনথিভুক্ত অভিবাসন-প্রত্যাশীদের তৃতীয় দেশগুলোতে স্থানান্তর করা সহজ হয়।

ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনের এক মাসেরও কম সময় আগে ইউরোপীয় কমিশনকে এক চিঠিতে এই দাবি পাঠানো হয়েছে যা বৃহস্পতিবার সংগ্রহ করেছে এএফপি। অতি-ডানপন্থী অভিবাসন-বিরোধী দলগুলো এতে লাভবান হবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী শাখাকে “ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসন রুখতে নতুন পন্থা ও সমাধান সূত্রের প্রস্তাব” দিতে আবেদন করা হয়েছে এই চিঠিতে।

এই গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে ইতালি ও গ্রিস। ইউরোপীয় ইউনিয়নে পৌঁছতে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে এই দেশগুলিতে হাজির হন। অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার (আইওএম) বক্তব্য অনুযায়ী, অনেকে দারিদ্র্য, যুদ্ধ বা নির্যাতন থেকে বাঁচতে পালানোর পথ বেছে নেন।

এই দেশগুলি চায়, সম্প্রতি গৃহীত আশ্রয় চুক্তিকে আরও কঠোর করুক ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২৭টি দেশ নিয়ে গঠিত এই ব্লকে আশ্রয়প্রার্থীদের উপর আরও কড়া নিয়ন্ত্রণ-নীতি চালু করা হয়েছে এই চুক্তিতে।

যে সংস্কারগুলি করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে নথি ছাড়া আসা ব্যক্তিদের দ্রুত যাচাই, সীমান্তে নতুন আটক কেন্দ্র স্থাপন ও প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত নির্বাসন।

তারা বলেছে, সুরক্ষার আবেদন করা আশ্রয়প্রার্থীদের অনুরোধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় তাদের তৃতীয় দেশগুলোতে পাঠানো সহজতর করা উচিত।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বহির্ভুত দেশ আলবেনিয়ার সঙ্গে ইতালির বিতর্কিত চুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছে তারা। প্রসঙ্গত, ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইতালির সমুদ্র থেকে উদ্ধারকৃত হাজার হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে রোম এই বলকান দেশের অস্থায়ী শিবিরে পাঠাতে পারে।

তারা আরও জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয় নীতিতে বর্ণিত “নিরাপদ তৃতীয় দেশে”র ধারণাকে পূনর্মূল্যায়ন করা উচিত।

ইইউ আইনে বলা হয়েছে, ব্লকে আসা নথিপত্রবিহীন ব্যক্তিদের তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানো যেতে পারে যেখানে তারা আশ্রয়ের অনুরোধ করতে পারে—যতক্ষণ পর্যন্ত সেই দেশটি নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় এবং আবেদনকারীর সঙ্গে সে দেশের প্রকৃত যোগসূত্র থাকে।

যুক্তরাজ্যের (বর্তমানে এই দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে) পাশ করা বিভাজনমূলক আইনের মতো প্রকল্পগুলিকে বাদ দেওয়া হবে। যুক্তরাজ্যের ওই আইন মোতাবেক, সকল অনিয়মিত আগত ব্যক্তিদের আশ্রয়ের অনুরোধ সংক্রান্ত অধিকার প্রত্যাখ্যান করতে পারে লন্ডন এবং তাদের রুয়ান্ডায় প্রেরণ করতে পারে।

১৫টি দেশ বলেছে, অভিবাসনের প্রধান পথসহ তৃতীয় দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করুক ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পাশাপাশি, ২০১৬ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় সে দেশের শরণার্থীদের তুরস্কে আশ্রয় দিতে যে ধরনের বন্দোবস্ত করেছিল তারা, সেই উদাহরণের উল্লেখ করা হয়েছে।

এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে অস্ট্রিয়া, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, গ্রিস, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড ও রোমানিয়া।

XS
SM
MD
LG