মঙ্গলবার কিয়েভ সফরের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দেশটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।
রয়টার্স জানিয়েছে ব্লিংকেন বলেন, “আমরা আজ আপনাদের সঙ্গে আছি এবং যতদিন না ইউক্রেনের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব,নিজের পথ নিজেই বেছে নেয়ার সক্ষমতা নিশ্চিত না হয় ততদিন আপনাদের পাশেই থাকবো”।
ব্লিংকেনের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি তাঁর কথায় , “অত্যন্ত জরুরি থোক সাহায্যের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান।
কংগ্রেসের অনুমোদনের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে ইউক্রেনের জন্য ৬.১০০ কোটি ডলারের থোক সাহায্যের প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন।
ব্লিংকেন জেলেন্সকিকে বলেন ওয়াশিংটন থেকে পাওয়া সামরিক সাহায্য “যুদ্ধক্ষেত্রে চলমান রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রকৃতপক্ষে পরিবর্তন আনবে”।
নিশ্চয়তার বার্তা দিলেন ব্লিংকেন
একটি অঘোষিত সফরে কয়েক ঘন্টা আগে ব্লিংকেন ইউক্রেনে গিয়ে পৌঁছান। ইউক্রেনের সৈন্যরা যখন দেশটির পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বড় রকমের আক্রমণের মুখোমুখি এবং প্রতিরক্ষার জন্য মিত্রদের কাছ থেকে নতুন অস্ত্র শস্ত্রের জন্য অপেক্ষমান তখন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা যাকে বলছেন, “পুনঃনিশ্চয়তা প্রদানের কঠোর বার্তা” নিয়ে ব্লিংকেনের এই সফর।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ এ ব্লিংকেন বলেন, “ আমি আজ ইউক্রেনে ফিরে এসেছি ইউক্রেনের প্রতি আমাদের অবিচল সমর্থন প্রদর্শনের জন্য এমন এক সময়ে যখন রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারা তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করছে”।
জেলেন্সকি ব্লিংকেনকে বলেন তার সঢর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন, “ আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে আমরা একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছি”।
গত এক সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ অঞ্চলে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে।
জেলেন্সকি জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নতুন সহায়তা যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে আসা এবং ইউক্রেনের আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও বলিষ্ঠ করার বিষয়গুলো নিয়ে ব্লিংকেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি আরও আশা করছেন যে খারকিভকে সুরক্ষা দিতে ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, ব্লিংকেন “যুদ্ধক্ষেত্রের সর্বশেষ তথ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আসা নতুন নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহায়তার প্রভাব, দীর্ঘ মেয়াদে নিরাপত্তা ও অন্যান্য অঙ্গীকার এবং ইউক্রেনের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করার চলমান কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করবেন।”
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, ইউক্রেনের যুদ্ধ উদ্যোগে সহায়তা করতে দেশটি ৪০ কোটি ডলার মূল্যমানের অস্ত্র ও উপকরণের প্যাকেজ দেবে।
হোয়াইট হাউস সোমবার বলেছে, খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার স্থলবাহিনীর আগ্রাসনের মোকাবিলায় ইউক্রেনকে সহায়তা করতে তারা যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য “সর্বাত্মক” প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
বাহিনীর আকার ও অস্ত্র-গোলাবারুদের পরিমাণ, উভয় দিক দিয়ে রাশিয়া থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে ইউক্রেনে। যার ফলে তাদের জন্য এখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে এবং দেশটি এর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।