অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে আলোচনায় নেতাদের ভাই-বোন ও সন্তান সংখ্যা


ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ, অমিত শাহ এবং এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ, অমিত শাহ এবং এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট গ্রহণ হয়ে গেলো ১৯ এপ্রিল। এর মধ্যে আলোচনায় এসেছে শীর্ষ নেতাদের ভাই-বোন ও সন্তান সন্ততির সংখ্যা। এর পর, আলোচনায় আসে জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরা ছয় ভাইবোন। দু'দিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন প্রচার শুরু করে কংগ্রেস।

এর পর আলোচনা আলাচনা শুরু হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রয়াত বিজেপি নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী, যোগী আদিত্যনাথ, অমিত শাহ, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের ভাই-বোন সংখ্যা নিয়ে।

ইতোমধ্যেই, হায়দরাবাদের এমপি এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন দেশের প্রথম সারির বিজেপি নেতাদের ভাইবোনের সংখ্যা নিয়ে। তার প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত নেতাদের মধ্যে, একমাত্র আরএসএস প্রধান ভাগবতের ভাইবোন সংখ্যা চার। বাকিদের ভাইবোন সংখ্যা সাত।

ওয়েইসি অভিযোগ করেন যে কথায় কথায় মুসলিমদের দিকে আঙুল তোলা হয়। বলা হয় মুসলমানদের সন্তান সংখ্যা অধিক। তিনি প্রশ্ন করেন, “বিজেপি নেতাদের পরিবারের কী অবস্থা?”

এই বিষয়ের সূত্র ধরে আলোচনায় আসে জন্ম নিয়ন্ত্রণ নীতি। গত সপ্তাহে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নির্বাচনী সভায় লালুপ্রসাদ যাদবকে লক্ষ্য করে তার সন্তান সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করেন। বলেন, “আপনি অনেক সন্তানের পিতা হয়েছেন। এই করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বারোটা বাজিয়েছেন।”

উল্লেখ্য যে নীতীশ কুমারের একটি মাত্র সন্তান। তার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া নীতিশের সন্তান মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন।

অন্যদিকে, লালুপ্রসাদের নয় সন্তান। সাত মেয়ে বড়; পুত্র তেজস্বী ও তেজপ্রতাপ ছোট। বিরোধীরা বলে থাকেন, পুত্র সন্তানের আশায় লালু প্রসাদ এতগুলো সন্তানের পিতা হয়েছেন।

সম্প্রতি নীতীশ কুমার বিহারের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন। এবিষয়ে বিধানসভায় তিনি নারীদের উদ্দেশে বলেন, “স্বামীরা ঘনিষ্ঠ হতে চাইলে আপত্তি করুন।” মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় বিতর্ক শুরু হলে, মন্তব্য ফিরিয়ে নিয়ে ক্ষমা চান নীতিশ কুমার।

নীতীশের অভিযোগ, লালুপ্রসাদ এখন সন্তানদের রাজনীতিতে নিয়ে আসছেন। লালু প্রসাদের বড় মেয়ে মিসা ভারতী, দুই পুত্র তেজপ্রতাপ ও তেজস্বী এবং আরেক মেয়ে রোহিণী এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া, তার স্ত্রী, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী স্ত্রী রাবড়ি দেবীও আছেন ভোটের লড়াইয়ে।

নয় সন্তানের পিতা হওয়া সত্বেও, ওয়েইসির তালিকায় লালুপ্রসাদের নাম নেই। তিনি বাছাই করে বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের ভাইবোনের সংখ্যা সংগ্রহ করেছেন।

স্মরণকালের মধ্যে ভারতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ নির্বাচনের ইস্যু হয়নি। ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের আমলে, জরুরি অবস্থার সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করার ঘটনা ঘটে। পরে, বহু নির্বাচনে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ছিলো উল্লেখ করার মতো ইস্যু। তবে, নেতাদের ভাইবোন এবং সন্তান সংখ্যা নিয়ে কেউ কাউকে কটাক্ষ করেননি।

ওয়েইসি যে বিজেপিকে লক্ষ্য করে বিরূপ সমালোচনা করছেন, এর কারণ হলো নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক ভাষণ। কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি মুসলিমরা বেশি সন্তানের জন্ম দেয় বলে মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, কংগ্রেস দেশের সম্পদ সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জবাব দিতেই ওয়েইসি মোদীসহ বিজেপি নেতাদের ভাইবোনের সংখ্যা নিয়ে প্রচার শুরু করেন।

মোদী জনসংখ্যা নিয়ে কথা বলেছিলেন রাজস্থানের বাঁশওয়ারার জনসভায়। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) মোদীর সেই ভাষণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সব বিরোধী দল। ওয়েইসির অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা প্রচার করছেন; তার পরও নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে আগামী ৪ জুন। দেশটির প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার নির্বাচিত করবেন ৫৪৩ জন সংসদ সদস্য।

XS
SM
MD
LG