শনিবার ভোরে ইরাকের একটি সামরিক ঘাঁটিতে একটি বিশাল বিস্ফোরণে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলির অন্তর্ভুক্ত ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন। বাহিনীটির কমান্ডার বলেন এটি একটি হামলা ছিল। আর সেনাবাহিনী বলে তারা এর তদন্ত করছে এবং সে সময় আকাশে কোনও যুদ্ধবিমান ছিল না।
দুটি নিরাপত্তা সূত্র ইতোপূর্বে বলে, একটি বিমান হামলা বিস্ফোরণটি ঘটায়। এতে ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ) এর একজন সদস্য নিহত হয় এবং বাগদাদ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দক্ষিণে কালসো সামরিক ঘাঁটিতে আরও ৮ জন আহত হয়।
পিএমএফ একটি বিবৃতিতে বলে, তাদের চিফ অফ স্টাফ আব্দুল আজিজ আল-মোহাম্মাদউই জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন এবং "যে জায়গায় হামলা করা হয়েছে সেখানে উপস্থিত তদন্ত কমিটিগুলির বিবরণ পর্যালোচনা করেছেন"।
ইরাকি সামরিক বাহিনী জানায়, একটি কারিগরি কমিটি ঘাঁটিটিতে বিস্ফোরণ এবং আগুনের কারণ অনুসন্ধান করছে। বিস্ফোরণটি শনিবার (২২০০ জিএমটি শুক্রবার) রাত ১ টায় ঘটেছে বলে তারা জানায়।
সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলে, "বিমান প্রতিরক্ষা কমান্ড প্রযুক্তিগত প্রচেষ্টা এবং রাডার সনাক্তকরণের মাধ্যমে রিপোর্ট নিশ্চিত করেছে, বিস্ফোরণের আগে এবং বিস্ফোরণের সময় বাবিলের আকাশে কোনো ড্রোন বা যুদ্ধবিমান ছিল না।"
ইরাকের বাবিল প্রদেশে এই ঘটনাটি ঘটেছে যখন শুক্রবার ইরানের শহর ইসফাহানে ইসরায়েলি হামলার সূত্র ধরে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি উত্তেজনা বিরাজমান ছিল। তেহরান এই হামলাকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি এবং ইঙ্গিত দিয়েছে যে তাদের প্রতিশোধ নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই।
দামেস্কে ইরানের দূতাবাসের কিছু অংশ ধ্বংস করা সম্ভবত ইসরায়েলের করা বিমান হামলাটির প্রতিবাদে ইরান ইসরায়েলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন বর্ষণ চালানোর ছয় দিন পরে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ১ এপ্রিল ইরানের দূতাবাসে হামলাটিতে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সাতজন কর্মকর্তা নিহত হন।
পিএমএফ-এ ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলি অন্তর্ভুক্ত, যারা ইরাকে ইসলামিক প্রতিরোধের পতাকার অধীনে কাজ করে। তারা এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের আক্রমণ করেছে এবং গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে।
জর্ডানে একটি ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন সৈন্য নিহত হওয়ার পর ফেব্রুয়ারির শুরুতে সিরিয়া ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ওপর তাদের হামলা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু, তারা ১ এপ্রিল ইসরায়েলি শহর ইলাতে হামলার দায় স্বীকার করে।যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য নিহত হবার পর ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ভারী বিমান হামলা চালায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড, শনিবার ভোরে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে, যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে বিমান হামলা চালিয়েছে এমন খবরের কথা অস্বীকার করে। এতে বলা হয়, "যুক্তরাষ্ট্র আজ ইরাকে কোনও বিমান হামলা চালায়নি।"
পিএমএফ সশস্ত্র উপদলের একটি গোষ্ঠী হিসাবে যাত্রা শুরু করে, যার অনেকগুলি ইরানের ঘনিষ্ঠ ছিল। পরবর্তীতে, তাদের ইরাকি কর্তৃপক্ষ একটি আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা বাহিনী হিসাবে স্বীকৃত দান করে।