অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইসরাইলের দাবি, ইরানের হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা


ইসরাইলের দিকে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পর জেরুজালেমের আকাশ। ১৪ এপ্রিল ২০২৪।
ইসরাইলের দিকে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পর জেরুজালেমের আকাশ। ১৪ এপ্রিল ২০২৪।

ইসরাইল বলেছে, ইরানের হামলা সফলভাবে প্রতিহত করতে সমর্থ হয়েছে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।এদিকে, তেহরান সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইসরাইল যদি এর জবাব দেয় তবে আরো হামলা চালাবে তারা।

ইরানের শীর্ষ সামরিক বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ইরানি ভূখণ্ড থেককেই ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইসরাইলি হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার নিহত হন। এর প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। যদিও সেই হামলার বিষয়ে ইসরাইল নীরব রয়েছে। তারা এ হামলার দায় স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেনি।

রবিবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইয়েমেন এবং ইরাক থেকেও ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের ছোঁড়া ৩০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই ইসরাইলের আকাশসীমার বাইরে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাধা দিয়েছে এবং ধ্বংস করেছে।

এদিকে, ইসরাইলি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, রবিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ইসরাইলের আকাশসীমা খুলে দেয়া হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বলেছে, তবে তেল আবিবের বেন গোরিয়ন বিমানবন্দরের বিমান চলাচলের সময়সূচি বদল হতে পারে।

এদিকে, হামলার পাল্টা ব্যবস্থা না নেয়ার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহবান জানিয়েছে ইরান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে জাতিসংঘে ইরানের মিশন বলেছে, “বিষয়টি শেষ হয়েছে বলেই ধরে নেয়া ভালো।” ইরানের মিশন আরো বলেছে, “তবে ইসরাইলি সরকার যদি আর একটাও ভুল পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ইরানের প্রতিক্রিয়া আরো কঠোর হবে।”

রবিবার ইসরাইলের ওপর ইরানের এই হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য জি-৭ দেশগুলোর নেতাদের একটি ভিডিও সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। গ্রুপের বর্তমান সভাপতি দেশ ইতালি এই সম্মেলন আহবান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং কানাডার মতো শিল্পোন্নত দেশগুলো এই জোটের সদস্য।

এদিকে, নিজ ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলের ওপর ইরানের বিমান হামলাকে এই অঞ্চলের প্রতিদ্বন্দ্বী আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মধ্যে সংঘাতের বড় লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরাইলের সমর্থনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাকে পাঠানো এক বার্তায়, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং বর্তমান ইসরাইলি রিজার্ভ বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্যাকব নাগেল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জর্ডান ও সৌদি মিত্ররা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে বরাবরের মতো সহায়তা করেছে।

একজন আমেরিকান সামরিক কর্মকর্তা ভয়েস অফ আমেরিকাকে নিশ্চিত করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী ইসরাইলের দিকে ছোঁড়া ইরানের ড্রোনগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ইরানি হামলার বিষয়ে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রমের বিষয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে অবহিত করেছেন। ইসরাইল যেকোন হামলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।

শনিবার রাতে নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কর্মকর্তারা বলছেন, ওই অঞ্চলের অংশীদারদের সাথে উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে, সেজন্য কাজ চালিয়ে যাবে বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা টিম।

ইরানের হামলা শুরুর পর নেতানিয়াহু টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বার্তায় বলেন, ইসরাইল যেকোনো হুমকি থেকে নিজেকে দৃঢ়তার সঙ্গে রক্ষা করবে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন প্রায় একই সময়ে এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। ইরানের হুমকির বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় সমর্থন দেবে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইসরাইলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য অনেক দেশের প্রশংসা করেন নেতানিয়াহু।

পরে এক বিবৃতিতে আইআরজিসি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইরানের যেকোন ক্ষতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া যে কোনো ধরনের পদক্ষেপের প্রতি ইরানি বাহিনী চূড়ান্ত জবাব দেবে।

ভয়েস অব আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি করেসপনডেন্ট জেফ সেলডিন এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন। কিছু তথ্য রয়টার্স ও এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে।

XS
SM
MD
LG