ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মাঝে চীন-রাশিয়ার পারস্পরিক সমর্থন ও পশ্চিমা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সমন্বিত বিরোধিতার নিদর্শন হিসেবে চীনের নেতা শি জিনপিং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করেন।
রুশ গণমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লাভরভ শিকে বলেন, “গত কয়েক দশকে, বিশেষত, গত কয়েক বছরে আপনার নেতৃত্বে (চীনের) যেসব সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রশংসা ও মুগ্ধতার বিষয়টি প্রকাশ করতে চাই।”
লাভরভ বলেন, “এসব সাফল্যের বিষয়ে আমরা সর্বান্তকরণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি, কারণ এগুলো (আমাদের) বন্ধুর সাফল্য। তবে বিশ্বের সবাই এ ধরনের মনোভাব পোষণ করে না এবং (তারা) চীনের উন্নয়নকে দমিয়ে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে—মূলত, (তারা) রাশিয়ার উন্নয়নকেও একইভাবে (দমিয়ে রাখতে চায়)।”
রাশিয়াকে বর্ধিত আকারে অর্থনৈতিক ও কূটনীতিক দিক থেকে একঘরে করে রাখা হচ্ছে, যার ফলে দেশটি স্নায়ু যুদ্ধের সময় কমিউনিস্ট ব্লকের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তাদের সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর আরও বড় আকারে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। গত কয়েক দশকে স্পষ্টতই এই দুই দেশ তাদের বৈদেশিক নীতিমালার সমন্বয় করেছে, যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে এবং জোট-নিরপেক্ষ রাষ্ট্রদের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মতো জোটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার এর আগে লাভরভ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে দুই নেতা আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে দুই দেশের সংহতির বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন।
লাভরভ জানান, যেসব আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার অবস্থানকে আমলে নেওয়া হয় না, রাশিয়া ও চীন সেগুলোর বিরোধিতা করে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির “তথাকথিত শান্তি ফর্মুলা” হচ্ছে “একেবারেই বাস্তবতা বিবর্জিত”।
যৌথ সম্মেলনে ওয়াং আবারও চীনের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান এবং “অবিলম্বে যুদ্ধের অবসানের” দাবি জানান।
ওয়াং আরও জানান, শি ও (রুশ প্রেসিডেন্ট) ভ্লাদিমির পুতিন এ বছর নিবিড় যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন এবং দুইজনই একে অপরের রাজধানী সফর করবেন বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে।
লাভরভ সোমবার চীনে পৌঁছান। এর আগে সম্প্রতি ওয়াং ও অন্যান্য শীর্ষ চীনা ব্যক্তিত্বরা রাশিয়া সফর করেন এবং (ইউক্রেন=রাশিয়ার) সংঘাতের কারণ বিষয়ে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন জানিয়েছেন।
ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কয়েক সপ্তাহ আগে পুতিন ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকস এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেইজিং সফর করেন। সেখানে তিনি চীনের সঙ্গে একটি “সীমাহীন” সম্পর্ক চুক্তি করেন। যার ফলে, আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তি আলোচনার দাবি জানানো সত্ত্বেও চীন রাশিয়ার সকল পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে।