অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গাজায় যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্যে বিধিনিষেধ আরোপ করলো তুরস্ক


যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী এয়ারড্রপের মাধ্যমে গাজায় বেসামরিক ব্যক্তিদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে (১ এপ্রিল, ২০২৪)
যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী এয়ারড্রপের মাধ্যমে গাজায় বেসামরিক ব্যক্তিদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে (১ এপ্রিল, ২০২৪)

তুরস্ক মঙ্গলবার বলছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে। কয়েক ধরনের পণ্য এই বিধিনিষেধের আওতায় পড়বে।

লোহা, ইস্পাত, সিমেন্ট, উড়োজাহাজের জ্বালানি ও সারসহ মোট ৫৪ ধরনের পণ্যের বাণিজ্যের ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

এক দিন আগে গাজায় এয়ারড্রপের মাধ্যমে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর অনুরোধ করে তুরস্ক, যা ইসরাইল নাকচ করে। এরপরই এলো তুরস্কের এই উদ্যোগ। মানবিক সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়া ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ প্রবেশ পথ নেই। এই সমস্যার সমাধানের উদ্দেশে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ উড়োজাহাজ থেকে এয়ারড্রপের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে।

ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল ক্যাটজ অঙ্গীকার করেছেন, তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, ইসরাইল “সহিংসতা ও চাঁদাবাজি” তে সাড়া দেবে না।

ক্যাটজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করে বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়েপ এরদোয়ান “গাজায় হামাসের হত্যাকারীদের সমর্থন জানানোর জন্য তুরস্কের জনগণের অর্থনৈতিক স্বার্থের” বলিদান করেছেন।

কায়রোতে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, হামাস ও কাতারের কর্মকর্তারা। এই আলোচনা শেষে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতি ও গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ক সর্বশেষ প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখছে।

এই প্রস্তাবে রয়েছে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির আহ্বান, গাজা আটকে থাকা কিছু জিম্মির মুক্তি, ইসরাইলের পক্ষ থেকে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, গাজায় আরও বেশি করে মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর অনুমোদন দেওয়া এবং গাজা ভূখণ্ডের উত্তর অংশে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফিরে আসতে দেওয়া।

ধারণা করা হয়, গাজায় হামাসের হাতে এখনো প্রায় ১০০ জিম্মি আটক আছেন। ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১,২০০ মানুষকে হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ১১২ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নভেম্বরে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি পান। গাজায় ছয় মাসের যুদ্ধে ৩৬ বা তার চেয়েও বেশি জিম্মি মারা গেছেন অথবা তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরাইলের পাল্টা হামলায় ৩৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার দুই তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, মোট নিহতের সংখ্যায় হাজার হাজার হামাস যোদ্ধা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এএফপি, এপি ও রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।

XS
SM
MD
LG