অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার মধ্যেই গাজায় ইসরাইলের হামলা


গাজা ভূখন্ডের দক্ষিণাঞ্চলের রাফাতে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে ধ্বংস হওয়া একটি ভবনের পাশ দিয়ে গাধা-বাহিত গাড়িতে চড়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি বালকরা।
গাজা ভূখন্ডের দক্ষিণাঞ্চলের রাফাতে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে ধ্বংস হওয়া একটি ভবনের পাশ দিয়ে গাধা-বাহিত গাড়িতে চড়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি বালকরা।

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের একটি বিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কায়রোতে আলোচনা শুরুর মধ্যেই রবিবার গাজায় আঘাত হানে ইসরাইল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গাজার মধ্যাঞ্চলে আলআকসা শহীদ হাসপাতালের ভেতরে অবস্থিত বেশ কয়েকটি তাঁবুতে ইরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় কমপক্ষে দুইজন নিহত হন।যুদ্ধের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ার পর, হাজার হাজার মানুষ এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবে, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহবান জানানো হয়। আর, এই জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে বন্দী সকল জিম্মিকে মুক্তি দেয়ারও আহবান জানানো হয়। নিরাপত্তা পরিষদের এই আহবান সত্ত্বেও, এই অঞ্চলে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।

গাজা যুদ্ধ ছয় মাস পার হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশর, গত নভেম্বরে প্রথম যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করে। এরপর দেশগুলো আরেকটি যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নেয় এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য মধ্যস্থতার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার হামাসের সঙ্গে আবার যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন।

তবে, হামাস কায়রোতে আলোচনায় উপস্থিত থাকবে না বলে একজন কর্মকর্তা রবিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

তারা ইসরাইলিদের নতুন কোনো প্রস্তাব আছে কিনা, তা মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে শোনার জন্য অপেক্ষা করছে।

হামাস এর আগে একটি ধারাবাহিক যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলো। এই যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে তারা যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান, গাজা থেকে ইসরাইলের পুর্ণাঙ্গ প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের জন্য দেশটির সীমান্ত খুলে দেয়া এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগকরা শীর্ষ বিদ্রোহী সহ শত শত ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তির বিনিময়ে বাকি সকল জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব করে।

নেতানিয়াহু, হামাসের সেই সর্তকে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেন এবং জিম্মি মুক্তির জন্য আবার আক্রমণ শুরু করার এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হামাস অন্তত ১০০ জনকে জিম্মি করে রেখেছে বলে মনে করা হয়। সেই সাথে, গত ৭ অক্টোবর হামাস যে সন্ত্রাসীহামলা চালিয়েছে, সেই হামলায় নিহত অন্তত ১,২০০ জন ইসরাইলের নাগিরিক নিহত হন। এদের মধ্যে ৩০ জনের দেহাবশেষ হামাসের কাছে রয়েছে বলে মনে করা হয়। হামাসের এই হামলার পর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়।

গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত হামাসকে ধ্বংস করার জন্য ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক অভিযানে ৩২,০০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। আর, ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। ইসরাইল দাবি করে যে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ জঙ্গি।

ভূখণ্ডের একটি বড় অংশ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং গাজারঅধিকাংশ জনসংখ্যা, গাজার দক্ষিণ অঞ্চলের সীমান্ত শহর রাফাতে আশ্রয় নিয়েছে।

XS
SM
MD
LG