অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গাজার ত্রাণ আটকে দেয়ায় ইসরাইলের সমালোচনা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব


মিশরীয় দিকের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের বাইরে গাজার জন্য মানবিক ত্রাণ বহনকারী মিশরীয় ট্রাকগুলি সারিবদ্ধভাবে আটকে রয়েছে । ফটোঃ ২৩ মার্চ, ২০২৪।
মিশরীয় দিকের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের বাইরে গাজার জন্য মানবিক ত্রাণ বহনকারী মিশরীয় ট্রাকগুলি সারিবদ্ধভাবে আটকে রয়েছে । ফটোঃ ২৩ মার্চ, ২০২৪।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রবিবার ইসরাইলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “আতঙ্ক ও অনাহার যেখানে গাজার জনগণকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে” সেখানে তাদের কাছে আরও ত্রাণ পৌঁছানোর বাধা শুধুমাত্র ইসরাইলই দূর করতে পারে।

“এটা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের ঘৃণ্য হামলা এবং জিম্মি আটকের ঘটনা কোনভাবেই ন্যায্য বলা যায় না,” গুতেরেস বলেন।

“কিন্তু এর কোনো কিছুই ফিলিস্তিনি জনগণের উপর এই সমষ্টিগত শাস্তির ন্যায্যতা দেয় না,” তিনি বলেন।

ইসরাইল আর হামাসের মাঝে চলা ৬ মাসের যুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিতে মিশরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য কায়রো সফরে জাতিসংঘ মহাসচিব এ কথা বলেন।

শনিবার মিশরের সঙ্গে গাজার রাফাহ সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে গুতেরেস গাজায় ত্রাণ পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিকে “নৈতিক অবমাননা” বলে বর্ণনা করেন।

“সীমান্তের এখান থেকে আমরা পুরো বিষয়টি কত হৃদয়বিদারক এবং তার হৃদয়হীনতা দেখতে পাই। ফটকের এক দিকে ত্রানভর্তি ট্রাকের দীর্ঘ সারি আটকে আছে, আর অন্য দিকে অনাহারের লম্বা ছায়া,” গুতেরেস বলেন।

গাজার রাফা সীমান্তে মিশরীয় দিকে অ্যান্টনি গুতেরেস সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন। ফটোঃ ২৩ মার্চ, ২০২৪।
গাজার রাফা সীমান্তে মিশরীয় দিকে অ্যান্টনি গুতেরেস সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন। ফটোঃ ২৩ মার্চ, ২০২৪।

ইসরাইলের রাফা পরিকল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি এবং কাতারে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা সত্ত্বেও ইসরাইল গাজার রাফাহ অঞ্চলের দক্ষিণে ভারী স্থলযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার যখন বজায় রেখেছে, তখন তিনি এ মন্তব্য করেন।

তবে ইসরাইল গাজার দক্ষিণ প্রান্তে তাদের পূর্নমাত্রার আক্রমণ চালায়নি। গাজার দক্ষিণে এই অঞ্চলটিতে দশ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টসহ বেশ কয়েকজন যুদ্ধ কৌশলবিদ এই সপ্তাহে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন। ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা এই অঞ্চলে আরও বেশি রক্তপাত এড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার পরিকল্পনা ছাড়া ইসরাইলি কোন হামলায় তাদের সমর্থন থাকবে না বলে ওয়াশিংটন তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। তবে ফিলিস্থিনিদের সরিয়ে কোথায় নেয়া হবে এ ব্যাপারে ইসরাইল কোন কিছু জানায়নি।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “রাফায় প্রবেশ করে এবং সেখানে অবস্থান নেয়া ব্যাটালিয়নগুলোকে নির্মূল করা ছাড়া হামাসকে পরাজিত করার আর কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই।”

ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সাথে বৈঠকের সময় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন তিনি আশা করছেন। যদি সেটা না পান তবে প্রয়োজন হলে তারা একাই তা করবেন।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত একদিনে আরও ৮৪ জন নিহত হয়েছে। যার ফলে যুদ্ধে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ২২৬ জনে। হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরাইলে ১,২০০ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জন জিম্মি হয়। এখনও হামাসের হাতে ১০০ জনের মতো আটক রয়েছে।

প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স ও এ এফপি থেকে নেয়া হয়েছে।

XS
SM
MD
LG