অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গাজায় অস্ত্রবিরতির জন্য জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব: রাশিয়া ও চীনের ভেটো


জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া গাজায় অস্ত্র বিরতি ও পণবন্দি চুক্তি সম্পর্কে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের সময় । ২২ মার্চ,২০২৪।
জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া গাজায় অস্ত্র বিরতি ও পণবন্দি চুক্তি সম্পর্কে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের সময় । ২২ মার্চ,২০২৪।

লড়াই বন্ধ করাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রাশিয়া ও চীন ভেটো প্রয়োগ করলে

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় অস্ত্র বিরতির একটি প্রস্তাব শুক্রবার আবারও ব্যর্থ হলো।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টমাস গ্রীনফিল্ড বলেন , “যুক্তরাষ্ট্রের লেখা প্রস্তাব বলেই রাশিয়া ও চীন প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিতে চায়নি কারণ তারা চায়, এই (নিরাপত্তা) পরিষদের সাফল্য নয় , তারা চায় আমাদের ব্যর্থতা।”

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১২ টি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব সমর্থন করে তবে আলজেরিয়া প্রস্তাবটির বিরোধীতায় চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেয় এবং গায়ানা ভোট দানে বিরত ছিল।

লড়াই থামানোর প্রচেষ্টায় এই পরিষদে তিন বার ভেটো দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবটি প্রস্তুত করে। নিরাপত্তা পরিষদের কোন কোন সদস্য বলেছে প্রস্তাবের ভাষাটি অস্পষ্ট ,যুক্তরাষ্ট্রের ঐ খসড়া প্রস্তাবে অসামরিক লোকজনকে রক্ষা করতে, আরও মানবিক সহায়তা পাবার জন্য এবং পণবন্দিদের মুক্তির জন্য “ অবিলম্বে এবং একটি টেকসই অস্ত্র বিরতির বাধ্যকতাকে তুলে ধরে।”

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া ভাষা প্রসঙ্গে বলেন , “ শান্তিপূর্ণ ফিলিস্তিনি অসমারিক লোকজনদের জীবন রক্ষার জন্য এটা যথেষ্ট নয়। এটি কোন ক্রমেই জাতিসংঘের ম্যান্ডেটে প্রদত্ত নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় কারণ এই পরিষদের উপর এ রকম একটি ব্যতিক্রমী দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যে তারা অস্ত্র বিরতির দাবি উত্থাপন করতে পারে এবং তা মেনে চলতে প্রয়োজনবোধে বাধ্য করতে পারে।”

চীনের রাষ্ট্রদূতও একই প্রতিধ্বণি তুলে বলেন খসড়া প্রস্তাবটি “অস্পষ্ট” এবং তাতে অবিলম্বে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানানো হয়নি।

জানুয়ারি মাসে নিরাপত্তা পরিষদে যোগদানকারী দেশ গায়ানা ভোট দানে বিরত ছিল। তাদের রাষ্ট্রদূত ক্যারলিন রোডরিগস-বার্কেট বলেন তার সরকার এমন প্রস্তাব সমর্থন করতে পারে না যাতে “দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ” অবিলম্বে ও নিঃশর্ত অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানানো হয়নি।

তিনি বলেন , “ পণবন্দিদের মুক্তির শর্তসাপেক্ষে অস্ত্রবিরতির দাবি সংযুক্ত থাকতে পারে না। আন্তর্জাতিক আইনে পণবন্দি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ এবং তাদের মুক্তি হতে হবে নিঃশর্ত।”

তিনি এ রকম প্রশ্নও উত্থাপন করেন যে তাদের কর্মকান্ডের জন্য কেবল হামাসকেই শুধু প্রশ্ন করা হয়, ইসরাইলকে নয় কেন।

হামাসের সমালোচনা নিরাপত্তা পরিষদের কোন কোন সদস্যের কাছে প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। টমাস-গ্রীনফিল্ড বলেন এটা একটা “জঘন্য” বিষয় যে ইসরাইলের উপর তাদের আক্রমণের নিন্দা জানাতে নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হয়েছে।

গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে এই নিয়ে সপ্তম বার নিরাপত্তা পরিষদ অস্ত্রবিরতি প্রস্তাবে রাজি হতে ব্যর্থ হলো। জাতিসংঘে দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের পরিচালক রিচার্ড গোয়ান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন পরিষদের অনেক সদস্যই এমনটা মনে করতে পারেন যে রাশিয়া ও চীন এমন একটি প্রস্তাবকে “ফুঁ মেরে উড়িয়ে দিল” যা ছিল এটি অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবার সব চেয়ে ভাল সুযোগ।

তিনি বলেন, “যদি এই প্রস্তাব পাশ হতো , এটা অন্তত আরও আলাপ -আলোচনার একটা সুত্র সৃষ্টি করতো এবং রাফাহ থেকে সরে আসতে ইসরাইলকে সংকেত পাঠাতো। এখন ইসরাইলিরা মনে করতে পারে যে তারা জাতিসংঘ থেকে কোন বাধার সম্মুখীন না হয়েই তাদের অভিযান চালিয়ে যাবে। সুতরাং রুশ-চীন ভেটো থেকে আসলে লাভবান হচ্ছেন (ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন) নেতেনিয়াহু।”

XS
SM
MD
LG