অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অক্সফ্যামঃ দরিদ্র দেশগুলোতে পানিসম্পদ 'জবরদখল' করছে ধনী কর্পোরেশনগুলি


ট্যাঙ্কার থেকে পাত্রে পানীয় জল নিতে হাজির হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা; তীব্র জল সংকটে ভুগছে এই অঞ্চল। বেঙ্গালুরু, ভারত। ১১ মার্চ, ২০২৪।
ট্যাঙ্কার থেকে পাত্রে পানীয় জল নিতে হাজির হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা; তীব্র জল সংকটে ভুগছে এই অঞ্চল। বেঙ্গালুরু, ভারত। ১১ মার্চ, ২০২৪।

জাতিসংঘ শুক্রবার বিশ্ব পানি দিবস পালন করেছে। এদিকে, এই আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন ব্যাপক আকার ধারণ করায় পানিসম্পদ নিয়ে সংঘাতের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।

অপরদিকে, বেসরকারি ত্রাণ সংস্থা অক্সফ্যাম অভিযোগ তুলেছে, মুনাফা বৃদ্ধির জন্য দরিদ্রতর দেশগুলি থেকে পানি “জবরদখল” করছে বিশ্বের বড় কর্পোরেশনগুলি।

চলতি বছর 'ওয়াটার ফর পীস'-কে থিম ঘোষণা করে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, “জলের যখন অভাব হয় বা জল দূষিত হয়, কিংবা জল পাওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে অসাম্য দেখা দেয় বা তারা জল পায় না, তখন একাধিক জনগোষ্ঠী ও দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে।”

জাতিসংঘ বলেছে, “জাতীয় সীমানা অতিক্রম করেছে এমন জলের উপর বিশ্বের ৩ বিলিয়নের বেশি মানুষ নির্ভর করে থাকে। তারপরেও মাত্র ২৪টি দেশ তাদের সমস্ত যৌথ জলসম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাড়ায় ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের সুরক্ষা ও সংরক্ষণের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের একত্রিত হওয়া একান্ত প্রয়োজন।”

দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম শহর জোহানেসবার্গে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ট্যাপ-কলগুলিতে জল নেই এবং এর ফলে কয়েক লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সোয়েটো শহরের উপকণ্ঠে ট্যাঙ্কার থেকে বোতল ও বালতিতে জল সংগ্রহ করার জন্য হাজার হাজার মানুষ লাইন দিচ্ছে। এই ট্যাঙ্কারগুলি শহরের বাইরে থেকে জল নিয়ে আসে।

সোয়েটোর এক বয়স্ক বাসিন্দা থাবিসিলে এমচুনু অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে সোমবার বলেন, “এটা গুরুতর চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার বয়সের নিরিখে এটা খুবই সমস্যার সময়। ২০ লিটারের বালতি বয়ে নিয়ে আমাকে এখানে আসতে হয় এবং দুঃখের বিষয় হল, আমাদের ট্যাপ-কলগুলি কখন আবার শুকিয়ে যাবে তা আমরা জানি না।”

জোহানেসবার্গে পানির ঘাটতির জন্য ভেঙে পড়া অবকাঠামো আংশিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে জলাধারগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের অনুমান, ২.২ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ ও সুষ্ঠু পানীয় জল ছাড়াই বসবাস করছে।

জাতিসংঘের ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক, বছরের কিছু সময়ে গুরুতর জলাভাবে দিন গুজরান করছে। বৈশ্বিক দক্ষিণের দরিদ্র দেশগুলি সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অক্সফ্যাম অভিযোগ তুলেছে, বিশ্বের বড় কর্পোরেশনগুলি জরুরি জল-সম্পদ “জবরদখল” করছে। এই সংস্থার আরও অভিযোগ, ধনী দেশ ও বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলি ফল, সবজি, মাংস, ফুল, বোতলবদ্ধ জলের মতো জল-নিবিড় পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করার মাধ্যমে জলের ঘাটতিকে দরিদ্রতর অঞ্চলে স্থানান্তরিত করে দিচ্ছে।

অক্সফ্যাম আরও উল্লেখ করেছে, স্থানীয় জনগণের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলেও বৃহৎ কর্পোরেশনগুলিকে জল তোলার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ফরাসি মালিকানাধীন বহুজাতিক খাদ্যপণ্য সংস্থা দানোঁ-র ক্রিয়াকলাপের কথা তুলে ধরেছে অক্সফ্যাম।

XS
SM
MD
LG