আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভরদকর বুধবার ঘোষণা করেছেন যে, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক কারণে তিনি পদ থেকে সরে যাচ্ছেন। সে দেশের প্রথম সমকামী ও দ্বিজাতি বংশোদ্ভূত নেতা হিসেবে তিনি ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।
ভরদকর বুধবার জানান, মধ্য-ডানপন্থী ফাইন গেইল পার্টির প্রধানের পদ থেকে অবিলম্বে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। আয়ারল্যান্ডের জোট সরকারের অংশ এই পার্টি। দলীয় নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর এপ্রিলে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হবে।
ভরদকর সংক্ষেপে বলেছেন, “আমার এখন পদত্যাগের কারণ ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক, তবে মূলত রাজনৈতিক।” তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি ‘ব্যাক-বেঞ্চ’ আইনপ্রণেতা হিসেবে সংসদে থাকার পরিকল্পনা করেছেন এবং তার “নির্দিষ্ট” কিছু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে।
৪৫ বছর বয়সী ভরদকর আয়ারল্যান্ডের দুইবারের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭-২০২০ সালে একবার এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। জোট-সঙ্গী ফিয়ানা ফাইলের প্রধান মাইকেল মার্টিনের সঙ্গে শেষবার তিনি দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছিলেন।
নির্বাচনে জেতার সময় তিনি ছিলেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী সেই সঙ্গে আয়ারল্যান্ডের প্রথম ঘোষিত সমকামী প্রধানমন্ত্রী। ভরদকরের মা আইরিশ ও বাবা ভারতীয়। আয়ারল্যান্ডের প্রথম দ্বিজাতিক প্রধানমন্ত্রী ভরদকর।
সমলিঙ্গ বিবাহকে বৈধতা দানের প্রচারণায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০১৫ সালে গণভোটে এটি অনুমোদন পেয়েছিল। গর্ভপাতের উপর নিষেধাজ্ঞা বাতিলেও তিনি কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে এক ভোটের মাধ্যমে এই আইন পাশ হয়।
ভরদকর ডাবলিনে পদত্যাগ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “আমি গর্বিত যে, আমরা এই দেশকে আরও সাম্যবাদী ও আরও আধুনিক জায়গায় পরিণত করেছি।”
২০০৭ সালে ভরদকর প্রথম সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং এক সময় তিনি বলেছিলেন, ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তিনি রাজনীতি ছাড়বেন।
২০১৬ সালে ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবার সময় তিনি আয়ারল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
তারপরেও তার এভাবে পদত্যাগ অনেকেই প্রত্যাশা করেননি। আয়ারল্যান্ডের বর্তমান উপ-প্রধানমন্ত্রী মার্টিন বলেন, “তার পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে পেরে আমি অবশ্যই বিস্মিত হয়েছিলাম।”
ভরদকর বলেছেন, তিনি জানতেন যে, তার প্রস্থানে “অনেকে বিস্মিত হবেন এবং কিছু মানুষ হতাশ হবেন।”