বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান ইসরাইলকে অবশ্যই ‘এক নম্বর কাজ’ বলে গণ্য করতে হবে।
গাজায় ত্রাণের জন্য নতুন একটি সামুদ্রিক করিডোর নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এই কূটনীতিক সাইপ্রাস, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের মন্ত্রীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আরও সহায়তা সরবরাহের জন্য গাজা উপকূলরেখায় একটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণের জন্য ভূমধ্যসাগরে একটি জাহাজ পাঠিয়েছে। তবে ডকটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে দুই মাস সময় লাগতে পারে জানিয়েছে তারা।
২০০ মেট্রিক টনের বেশি মানবিক খাদ্য সহায়তা নিয়ে স্পেনের একটি জাহাজ মঙ্গলবার সাইপ্রাস থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। এটি অনাহারে থাকা লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে খাদ্য প্রদানের জন্য সর্বসাম্প্রতিক প্রয়াস।
সেলিব্রিটি শেফ হোসে আন্দ্রেস প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন দ্বারা সংগৃহীত খাবার স্প্যানিশ ত্রাণ সংস্থা ওপেন আর্মসের একটি জাহাজ দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং গাজা ভূখণ্ডের অজ্ঞাত একটি স্থানে এটি যাচ্ছে। ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে দুই থেকে তিনদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজায় দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফায় জাতিসংঘের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে বিমান হামলায় হামাসের এক জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইল।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরাইলের হামলায় কমপক্ষে আরও চারজন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন জাতিসংঘের কর্মী।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলায় আনরো কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু হাসনা নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী আবু হাসানকে একজন ‘হামাস সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাদের দাবি, আবু হাসনা জঙ্গি গোষ্ঠীটির জন্য একটি ‘গোয়েন্দা অপারেশন রুমের’ নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং ‘মানবিক ত্রাণের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ ও হামাস সন্ত্রাসীদের মধ্যে তার বিতরণেও জড়িত ছিল।’
গাজায় হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় বুধবার জানায়, বিগত দিনে ইসরাইলি হামলায় আরও ৮৮জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে মোট ৩১,২৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত আর ৭৩,০০ আহত হয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাস যোদ্ধারা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাবার পর ইসরাইল হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষে এক ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যুরো প্রধান নাইক চিং এবং হোয়াইট হাউসের ব্যুরো প্রধান প্যাটসি উইডাকুসোয়ারা এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন। এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স এবং এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে।