আলাবামা রাজ্যের সেনেটর কেটি ব্রিট রিপাবলিকান দলের পক্ষে জাতীর উদ্যেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘স্টেট অফ দ্য নেশন’ ভাষণের জবাব দিয়েছেন।
টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে ব্রিট বলেন, বাইডেনের নেতৃত্বে দেশ বিপথে যাচ্ছে এবং নতুন প্রজন্ম কম সুযোগ পাচ্ছে।
“যে দেশকে আমার চিনি এবং ভালবাসি, সে দেশ যেন হারিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা এবং কম স্বাধিনতা পাবে। আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছে, হয়তো আমার নিজের সন্তানরা তাদের আমেরিকান স্বপ্ন অর্জন করার সুযোগ পাবে না।
“আমাদের প্রকৃত স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন শুরু এবং শেষ হয় এটা দিয়েঃ আমাদের পরিবারগুলো কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের দেশ এর চেয়ে ভাল করতে পারে,” তিনি বলেন।
সেনেটর কেটি ব্রিট অভিবাসন বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে বলেন, আজ সীমান্তে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, তা প্রেসিডেন্ট বাইডেনেরই ‘আবিষ্কার।’
“প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতিহাসের সবচেয়ে সুরক্ষিত সীমান্ত পেয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা নেয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করলেন, সকল বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করলেন এবং লক্ষ লক্ষ অভিবাসীকে ক্ষমা করার পরিকল্পনা ঘোষণা করলেন।
“আমরা জানি, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই সীমান্ত সঙ্কট শুধু শুরুই করেন নি। তিনি তাঁর প্রথম ১০০ দিনে ৯৪টি নির্বাহী আদেশের এটা আবিস্কার করেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সীমান্ত সঙ্কট একটি কলঙ্ক। এটা ঘৃণ্য। এবং এটা প্রায় পুরোটাই আটকানো যেত,” তিনি বলেন।
‘বাইডেনমিক্স’ নিয়ে দ্বিমত
অর্থনীতি ভাল করছে বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দাবী সেনেটর ব্রিট প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন ‘বাইডেনমিক্স’ কাজ করছে না।
“আজ, কঠোর পরিশ্রমী পরিবারগুলো সংসার চালাতে পারছেনা। আর, ক্রমবর্ধমান মর্টগেজের হার এবং সন্তান দেখা-শোনার আকাশচুম্বী খরচের ফলে তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারছে না।
“আমেরিকান জনগণ কোনমতে জীবন চালিয়ে যাচ্ছে, আর প্রেসিডেন্ট বাইডেন গর্বের সাথে বলছেন তাঁর অর্থনীতি বাইডেনমিক্স কাজ করছে! কিন্তু আমরা ভিন্ন কথা জানি,” তিনি বলেন।
তিনি আমেরিকার বিভিন্ন শহরে নিরাপত্তার অভাবের জন্য বামপন্থীদের দায়ী করে বলেন, তাদের জন্য দেশের জনপদ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
“অনেক বছর ধরে বামপন্থীরা অপরাধিদের আদর করেছে আর পুলিশের জন্য বাজেট কমিয়েছে – একই সময় সিরিয়াল অপরাধীদের মুক্ত হতে দিয়েছে। ফলাফল মর্মান্তিক কিন্তু অনুমেয় – আমেরিকার ছোট শহর থেকে বিখ্যাত নগরের রাজপথে, জীবন ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে,” তিনি বলেন।
বহির্বিশ্বে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন
সেনেটর ব্রিট অভিযোগ করেন, বাইডেনের অধীনে বহির্বিশ্বে আমেরিকার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
“আমি যেখান থেকে এসেছি, সেখানে আপনার কথাই আপনার নিশ্চয়তা। কিন্তু গত তিন বছর ধরে এই প্রেসিডেন্ট দেখিয়েছেন, আমেরিকার কথা আগের মত আর নেই। আফগানিস্তান থেকে বিপর্যয়কর প্রস্থানের মাধ্যমে মিত্রদের ফেলে আসা থেকে বেপরোয়া ভাবে ইরানের সাথে আরেকটি বিপজ্জনক চুক্তির চেষ্টা করা, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ব্যর্থ হয়েছেন।
“আমরা পিছু হটছি, এবং মুক্তির শত্রুরা এখানে সুযোগ দেখছে।
“এই মুহূর্তে, আমাদের কমান্ডার-ইন-চিফ কমান্ডে নেই। মুক্ত বিশ্বের এই সিদ্ধান্তহীন এবং সংকুচিত নেতার চেয়ে ভাল প্রাপ্য। আমেরিকার প্রাপ্য এমন নেতা, যারা বুঝতে পারে যে, নিরাপদ সীমান্ত, স্থিতিশিল বাজার মূল্য, নিরাপদ রাস্তা এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী হচ্ছে একটি মহান জাতীর ভিত্তি।”
তবে তিনি ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখতে পান, যার জন্য তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি কাজ করে যাচ্ছে।
“এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে আমরা একটা চৌরাস্তার মোড়ে। কিন্তু এখন একটা সুখবরঃ আমরা, জনগণ এখনো চালকের আসনে আছি। আমাদের ভবিষ্যৎ আলোকিত হবে, নাকি আমরা আমেরিকার ক্রমাগত ক্ষয় মেনে নেব, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারবো।
“আমি জানি কোন সিদ্ধান্ত আমাদের সন্তান্দের প্রাপ্য – এবং সেই পথের জন্য রিপাবলিকান পার্টি লড়াই করছে,” তিনি বলেন।