শনিবার ইরানি মিডিয়ার অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের সংসদীয় নির্বাচনের জন্য ভোট দেওয়ার হার প্রায় ৪০ শতাংশ যা সেখানকার ইতিহাসে সর্বনিম্ন বলে মনে হচ্ছে। এই নির্বাচনটিকে রক্ষণশীল শাসকদের বৈধতার পরীক্ষার নির্বাচন বলে ধরা হয়।
নাম-করা মধ্যপন্থী এবং রক্ষণশীলরা শুক্রবারের এই নির্বাচন থেকে দূরে থাকেন, এবং সংস্কারবাদীরা এটিকে মুক্ত নয় এবং অন্যায্য নির্বাচন বলে অভিহিত করেন কারণ এটি প্রধানত ইসলামী বিপ্লবী আদর্শের প্রতি অনুগত কট্টরপন্থী এবং অপেক্ষাকৃত কম রক্ষণশীলদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা ছিল।
ইরানের প্রথম সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি সেই সব সমালোচকের মধ্যে ছিলেন যারা শুক্রবার ভোট দেননি।
কারাবন্দী নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নার্গেস মোহাম্মদী, একজন নারী অধিকার আইনজীবী। রয়টার্সের কাছে তার পরিবারের দেওয়া এক বিবৃতিতে এই নির্বাচনকে "ভুয়া" বলে অভিহিত করেন।
হামশাহরি এবং কায়হান সংবাদপত্র অনুযায়ী নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার প্রায় ৪০ শতাংশ বলে অনুমান করা হচ্ছে। ভোটের আগে সরকারী সমীক্ষায় অনুমান করা হয় প্রায় ৪১ শতাংশ নিবন্ধিত ইরানিরা ভোট দেবেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইরানের "শত্রুরা" ইরানী ভোটারদের মধ্যে হতাশা তৈরি করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের জন্য এই শব্দটি বহার করেন।
একটি সংস্কারপন্থী সংবাদপত্র হাম মিহানের প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনাম ছিল "নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ"। এই সংবাদপত্রটিও মোট ভোটার উপস্থিতির হার ৪০ শতাংশ বলে উল্লেখ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় শনিবার দিনের শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মোট ভোটদানের সংখ্যা জানাতেপারে। ভোটদানের পরিসংখ্যান যদি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয় তবে এটি হবে ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর সর্বনিম্ন ভোটদান।
ইরানের ২০২০ সালের সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার ৪২.৫ শতাংশে নেমে আসে যা ২০১৬ সালে প্রায় ৬২ শতাংশ ছিল।
নির্বাচনটি ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের পর অনুষ্ঠিত হয়, যা বিপ্লবের পর থেকে ইরানের সবচেয়ে খারাপ রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্ট করে এবং কাকতালীয়ভাবে দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে ক্রমবর্ধমান হতাশা বাড়িয়ে তোলে।
শুক্রবার ২৯০ আসনের সংসদে ১৫ হাজারেরও বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে, কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ৮২.৫ শতাংশ ভোট নিয়ে অ্যাসেম্বলি অফ এক্সপার্টস’এ পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
হাসান রুহানি, একজন বাস্তববাদী যিনি ইরানের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৩ এবং ২০১৭ সালে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি পরে নির্বাচনে অংশগ্রহন করা থেকে নিষিদ্ধ হন, যা নিয়ে মধ্যপন্থীরা ব্যাপক সমালোচনা করে।