নির্বাচনে কারচুপির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ঘোষণার এক সপ্তাহ পর শুক্রবার রাতে, পাকিস্তানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার) ব্যবহার নিষিদ্ধ রয়ে গেছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক নজরদারিসংস্থা নেটব্লকস সপ্তম দিনের মতো সেবা স্থগিত থাকার রেকর্ড রেখেছে। সপ্তাহের দিনগুলোতে এই প্ল্যাটফর্ম মাঝে মাঝে পাওয়া যাচ্ছিল।
লিথুয়ানিয়াভিত্তিক ইন্টারনেট শাটডাউন ট্র্যাকার সার্ফশার্কের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোট পাঁচবার ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ট্র্যাকারের রেকর্ড অনুযায়ী গত বছর চার বার এবং ২০২২ সালে তিন বার এই পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল।
সার্ফশার্কের মুখপাত্র লিনা সুরভিলাকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, "পাকিস্তানের ইন্টারনেট সেন্সরশিপ প্রচেষ্টা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। ২০২৪ সাল দেশটির জন্য ইন্টারনেট বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে একটি বড় রেকর্ড বছর হতে পারে। ”
কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই অনলাইন নির্বাচনী কর্মসূচি শুরু করার পর , ইউটিউব, এক্স, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো বেশ কয়েকটি বড় সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে লক্ষ্য করে ২০২৪ সালে কিছু বিধিনিষেধ আসে। ৫ টির মধ্যে বড় দুটিই আসে এই জানুয়ারিতে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির পাকিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় বাকি তিনটি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। পাকিস্তান নির্বাচনের দিন এবং এরপর কিছু সময় দেশজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। এই বিতর্কিত পদক্ষেপকে কর্তৃপক্ষ এই বলে সমর্থন করে যে নির্বাচনের নিরাপত্তার জন্য এটার দরকার ছিল।
এ বছর পাকিস্তানে দীর্ঘতম সময় ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ থাকে। দেশের বেশিরভাগ অংশে ১৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে এক্স কে জনগণের নাগালের বাইরে রাখা হয়। রাওয়ালপিন্ডি অঞ্চলের কমিশনার লিয়াকত আলী চাথা বড় আকারের নির্বাচনে কারচুপি হওয়া দেখেছেন বলে জানান। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে তার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে সেই কর্মকর্তা, আদালতে তার বক্তব্য ফিরিয়ে নেন।
ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগে পাকিস্তানের নির্বাচন ভেস্তে যায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পিছিয়ে পড়ে পিটিআই। তাদের দাবি, তাদের নির্বাচনী ম্যান্ডেট চুরি হয়ে গেছে। অন্যান্য দলও ফলাফলের বিরোধিতা করেছে। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
ভয়েস অব আমেরিকার উর্দু সার্ভিসের নাভিদ নাসিম ও জিয়া উর রেহমান এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন।