আফগানিস্তানে মৌলবাদী তালিবান কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার পৃথক ঘটনায় হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত দুজন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড প্রকাশ্যে কার্যকর করেছে।
তালিবানের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর গজনির একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে বন্দুকের গুলিতে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
বিপুল সংখ্যক বিচার বিভাগীয় এবং সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সেখানকার অধিবাসীরা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার এই প্রক্রিয়াটি প্রত্যক্ষ করেছেন। তবে কাউকেই স্টেডিয়ামে সেলুলার ফোন বা ক্যামেরা আনতে দেয়া হয়নি।
আদালতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনের বিচার করা হয়েছে এবং দুজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালতের বিবৃতিতে আরও বলা হয় তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা অনুমোদন দেয়ার পর এই বিচারিক আদেশ কার্যকর করা হয়েছে।
২০২১ সালের আগস্টে তালিবান ক্ষমতা পুনরুদ্ধার এবং ইসলামি আইনের কঠোর ব্যাখ্যা চাপিয়ে দেয়ার পর থেকে শত শত দর্শকের সামনে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং নারীসহ প্রায় ৩৫০ জনকে বেত্রাঘাত করেছে। ভুক্তভোগী নারীদের বিরুদ্ধে বেশিরভাগই ব্যভিচার এবং বাড়ি থেকে পালানোর মতো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বৃহস্পতিবারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “সমস্ত শরিয়া মান বিবেচনায় নিয়ে আদালতের আদেশ অনুসরণ করা হয়েছে।”
জাতিসংঘ এই শাস্তিকে মানবাধিকার লংঘন বলে সমালোচনা করে বলেছে, এগুলো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন বা ইউএনএএমএ বৃহস্পতিবারের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এটিকে জীবনের মৌলিক অধিকারের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে অভিহিত করে নতুন করে এর সমালোচনা করেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ মিশনটি লিখেছে, “ইউএনএএএমএ আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষকে মৃত্যুদণ্ড বিলোপের পদক্ষেপ হিসেবে এটি কার্যকর করার ওপর তাৎক্ষণিক স্থগিতাদেশ আরোপের আহ্বান জানাচ্ছে। ”
তালিবান এই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা এবং প্রশাসন ইসলামি বিধি-বিধান ও নির্দেশিকার ওপর ভিত্তি করে চলে।