মঙ্গলবার চিলির একটি আপিল আদালত রায় দিয়েছে, ১৯৭৩ সালে দেশটিতে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের কিছুদিন পর নোবেল পুরস্কারজয়ী কবি পাবলো নেরুদার মৃত্যুর ঘটনার আবারও তদন্ত হওয়া উচিত। আদালত বলছে, নতুন করে পদক্ষেপ নিলে কীভাবে এই কবির মৃত্যু হল, তা স্পষ্ট হবে।
গত ডিসেম্বরে নেরুদার ভাইপো এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া আবারও শুরু করার আবেদন জানালেও একজন বিচারক তা নাকচ করে। নথি অনুযায়ী, নেরুদার মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক কারণ ক্যানসার। কিন্তু তার ভাইপো রোদোলফো রেইয়েস ভিন্ন কারণ অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে এই আবেদন করেন। রেইয়াস বলছেন কানাডা, ডেনমার্ক ও চিলির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নেরুদাকে বিষপ্রয়োগের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন।
রেইয়েস বলছেন, ডেনমার্ক ও কানাডার গবেষণাগারে পরিচালিত পরীক্ষায় নেরুদার দেহে “উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্লোরিসট্রিডিয়াম বটুলিনাম পাওয়া যায়, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।” এই বিষ মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে পক্ষাঘাত ও মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী চিলির ইতিহাসে নেরুদার মৃত্যু অন্যতম প্রধান বিতর্কিত বিষয়। এই রায় এই বিতর্কে সর্বশেষ সংযোজন। দীর্ঘদিন ধরে নেরুদার মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক কারণ হিসেবে প্রস্টেট ক্যানসারজনিত জটিলতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার গাড়ি চালক কয়েক দশক ধরে দাবি করে এসেছেন, নেরুদাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল।
ডিসেম্বরে একজন বিচারক রায় দেন, ফরেনসিক পরীক্ষা ইতোমধ্যে পরিচালিত হয়েছে অথবা এখন “অনেক দেরি” হয়ে গেছে এবং এ থেকে কোনো ফলাফল নির্ধারণ সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার সানতিয়াগোর আপিল আদালত সর্বসম্মতিক্রমে উল্লেখিত বিচারকের রায় প্রত্যাহার করে এবং নেরুদার ভাইপোর আবেদন অনুযায়ী সকল প্রক্রিয়া সম্পাদনের নির্দেশ দেয়। এসব পদক্ষেপের মধ্যে আছে মৃত্যু সনদের ক্যালিগ্রাফিক বিশ্লেষণ, বিদেশি এজেন্সিদের করা পরীক্ষাগুলোর মেটা-বিশ্লেষণ, চিলির ডকুমেন্টেশন প্রকল্পের বিবৃতিগুলোকে তলব করা এবং ক্লস্ট্রিডিয়াম বটুলিনামের একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া।
ভালোবাসার কবিতা লেখার জন্য নেরুদা সুপরিচিত। তিনি ১৯৭১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। পাশাপাশি আরও কয়েক ডজন পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।