অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অ্যালেক্স হেলি 


অ্যালেক্স হেলি
অ্যালেক্স হেলি

যুক্তরাষ্ট্রে ফেব্রুয়ারি মাসকে 'ব্ল্যাক হিস্টরি মান্থ' হিসাবে পালন করা হয়। এর মাধ্যমে এই দেশের ইতিহাসে যেসব কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক বা ঘটনা বিশেষ অবদান রেখেছে , সেগুলো তুলে ধরা হয়। এর অংশ হিসাবে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা এই দেশের বিখ্যাত কিছু কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের অবদানের কথা তুলে ধরছে।

অ্যালেক্স হেলি

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ লেখক অ্যালেক্স হেলি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন তাঁর ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত বই, ‘রুটস’-এর মাধ্যমে। এই উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৭৭ সালে টেলিভিশনে মিনি সিরিজ প্রদর্শন করা হলে তার দর্শক সংখ্যা ১৩ কোটি ছাড়িয়ে যায়। এই উপন্যাসে ১৯২১ সালে জন্ম নেয়া হেলি মূলত কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের ইতিহাস তুলে ধরেছেন।

‘রুটস: দ্য সাগা অফ এন আমেরিকান ফ্যামিলি’ উপন্যাস তিনি শুরু করেছেন কুন্তা কিন্তের কাহিনী দিয়ে যাকে ১৭৬৭ সালে গাম্বিয়া থেকে অপহরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে ক্রীতদাস হিসেবে নিয়ে আসা হয়। হেলি দাবি করেন যে তিনি হচ্ছেন এই কুন্তা কিন্তের সপ্তম প্রজন্ম।

উপন্যাসে আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের জীবন সংগ্রামের কথা যেমন ব্যক্ত হয়েছে তেমনি আমেরিকায় ক্রমান্বয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠারও আভাস পাওয়া যায়। হেলি বলেন যে তাঁর জীবনের সবচেয়ে আবেগ আপ্লুত মূহুর্তটি ছিল যখন ১৯৬৭ সালে তিনি ম্যারিল্যান্ডের অ্যানাপলিস শহরে যান যেখানে তাঁর পূর্বপুরুষরা আফ্রিকা থেকে ক্রীতদাস হিসেবে এসেছিলেন।

হেলি ১৯৬৫ সালে তাঁর প্রথম বই, ‘দ্য অটোবাইগ্রাফি অফ ম্যালকম এক্স’ প্রকাশ করেন যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার আন্দোলনের এই শীর্ষ নেতার উত্থান ও পতনের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। একজন অপরাধী থেকে ম্যালকম এক্স কীভাবে নেশন অফ ইসলাম সংগঠনের জাতীয় মুখপাত্র হয়ে উঠলেন, কৃষ্ণাঙ্গদের গর্ব, তাঁদের জাতীয়তাবাদ - এ সব কথা ব্যক্ত করা হয়েছে এই বইয়ে।

তাঁর বাবা সাইমান হেলি কৃষিবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। বাবার মতো অ্যালেক্সও যেসব কলেজে পড়াশোনা করেছেন সেগুলোতে সে সময় কেবল কৃষ্ণাঙ্গরাই অধ্যয়ন করতেন। কুড়ি বছর বয়সে তিনি উপকূল রক্ষীর চাকরিতে যোগ দেন।

প্রশান্ত মহাসাগরের একজন উপকুল রক্ষী হয়েও তিনি তখন গল্প লেখা শুরু করেন। তিনি নিজেই বলেছেন যে এই দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রায় তাঁর প্রধান শত্রু ছিল জাপানি বাহিনী নয়, বরঞ্চ এই কাজের এক ঘেয়েমি।

উপকূল রক্ষী বিভাগের চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি রীডার্স ডাইজেস্ট পত্রিকার একজন সিনিয়র এডিটর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন । সেই সময়ে প্রথম একজন কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে তাঁর ভাই জর্জ যে দক্ষিণের আইন স্কুলে ভর্তির জন্য সংগ্রাম করছিলেন সে কথাটি ঐ পত্রিকায় তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিত্জার পুরস্কার প্রাপ্ত অ্যালেক্স হেলি ১৯৯২ সালে মারা যান।

XS
SM
MD
LG