রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোরতর শত্রু অ্যালেক্সি নাভালনি শুক্রবার কারাগারে মারা গেছেন। রাশিয়ার কারা সংস্থা এ সংবাদ জানায়। তিনি সরকারি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতেন এবং ক্রেমলিনবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ করেছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৪৭ বছর।
রাশিয়ার ফেডারেল পেনিটেনশিয়ারি সার্ভিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার হাঁটাহাঁটি করার পর নাভালনি অসুস্থ বোধ করেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার চিকিৎসার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল, কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দ্যমিত্রি পেসকভ বলেছেন, নাভালনির মৃত্যু সম্পর্কে পুতিনকে অবহিত করা হয়েছে এবং কারা বিভাগ নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তার মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
নাভালনির মুখপাত্রী কিরা ইয়ারমিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ বলেন, নাভালনির টিম এখন পর্যন্ত তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। নাভালনিকে যে শহরের কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছিল, তার আইনজীবী সেখানে যাচ্ছেন।
চরমপন্থার অভিযোগে ১৯ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করা নাভালনিকে ডিসেম্বরের মধ্যে রাশিয়ার মধ্যাঞ্চল ভ্লাদিমির এলাকায় তার প্রাক্তন কারাগার থেকে আর্টিক সার্কেলের ওপরে রাশিয়ার সর্বোচ্চ সুরক্ষা স্তরের একটি “বিশেষ শাসন” কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
নাভালনিকে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে কারাবন্দী করা হয়। সে সময় তিনি নার্ভ এজেন্টের বিষক্রিয়া থেকে সুস্থ হয়ে জার্মানি থেকে ফিরে এসেছিলেন। বিষক্রিয়ার জন্য তিনি ক্রেমলিনকে দোষারোপ করেছিলেন। গ্রেপ্তারের আগে তিনি সরকারি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান, ক্রেমলিনবিরোধী বড় ধরনের বিক্ষোভ সংগঠিত করেন এবং সরকারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এরপর থেকে তাকে তিনবার কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল, যার সবকটিই তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
পুতিনের রাশিয়ায় রাজনৈতিক বিরোধীরা প্রায়শই উপদলীয় কোন্দলের মধ্যে ম্লান হয়ে যায় বা কারাবাস, সন্দেহভাজন বিষপ্রয়োগ বা অন্যান্য ব্যাপক দমন-পীড়নের পরে নির্বাসনে যায়। কিন্তু নাভালনি ক্রমাগতভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন এবং দৃঢ়তা, সাহসিকতা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কীভাবে ক্রেমলিনের স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের দমবন্ধ করা অবস্থা ঠেকাতে পারে সে সব বুঝে তিনি বিরোধীদের শীর্ষে পৌঁছে যান।