টিগ্রায় অঞ্চলে ব্যাপক চুরির কারণে দীর্ঘ বিরতির পর ত্রাণ সংস্থাগুলো এক মাসের বেশি সময় আগে পুনরায় শস্য সরবরাহ শুরু করেছে। কিন্তু বর্তমানে ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় টিগ্রায় অঞ্চলের লাখ লাখ অভাবী মানুষের ক্ষুদ্র একটি অংশ খাদ্য সহায়তা পাচ্ছে। বার্তা সংস্থা এপি একথা জানায়।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচি ও ইথিওপিয়ার কর্মকর্তাদের যৌথ নেতৃত্বাধীন ত্রাণ সংস্থা টিগ্রায় ফুড ক্লাস্টারের মেমো অনুযায়ী, চলতি মাসে এই অঞ্চলে মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর লক্ষ্যবস্তু ৩২ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১৪ শতাংশ ২১ জানুয়ারির মধ্যে খাদ্য সহায়তা পেয়েছে।
মেমোতে মানবিক গোষ্ঠীগুলোকে তাদের কার্যক্রম ‘অবিলম্বে বাড়ানোর’ আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে, “এখনই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে শুষ্ক মৌসুমে মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও অপুষ্টি দেখা দেবে এবং এই অঞ্চলের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু ও নারীদের সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে।”
ত্রাণের শস্য চুরির ‘বড় আকারের’ একটি পরিকল্পনা ধরা পড়ার পর গত বছরের মার্চে টিগ্রায় খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে দেয় জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। গত জুনে ইথিওপিয়ার বাকি অংশে এই স্থগিতাদেশ কার্যকর করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই ঘটনাটি এ যাবৎকালের শস্যের সর্ববৃহৎ চুরি হতে পারে। ত্রাণ দাতারা এই জালিয়াতির জন্য ইথিওপিয়ার সরকারি কর্মকর্তা ও দেশটির সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে। ইথিওপিয়া সরকার এই ইঙ্গিতকে ক্ষতিকর ‘অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
চুরি ঠেকাতে সংস্কার আনার পর জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও টিগ্রায় কর্তৃপক্ষ বলছে, যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে খাদ্য পৌঁছাচ্ছে না।
টিগ্রায় ৫৫ লাখ মানুষের আবাসস্থল। দুই বছর ধরে অঞ্চলটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু। এই যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতেও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের একটি প্যানেল ইথিওপিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে সংঘাতের সময় সেখানে খাদ্য সহায়তা সীমিত করে যুদ্ধের পদ্ধতি হিসেবে অনাহারকে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে এই সংঘাত সমাপ্ত হয়েছিল।