জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত(আইসিজে)গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা রোধে ইসরাইলকে 'তার ক্ষমতার মধ্যে’ সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
তবে এই বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে কোনো যুদ্ধ বিরতির আদেশ দেয়নি আইসিজে।
শুক্রবার ১৭ জন বিচারক নিয়ে গঠিত আইসিজে প্রদত্ত প্রাথমিক রায়ে, ইসরাইলকে গাজায় মৌলিক পরিষেবা এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের পদ্ধতি কার্যকর করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গাজায় এই অঞ্চলের ২৩ লাখ মানুষের বেশিরভাগ, ইসরাইল ও জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে তিন মাস ধরে চলমান যুদ্ধের কারণে পর্যাপ্ত খাদ্য ও আশ্রয় খুঁজে পেতে লড়াই করছে।
আইসিজে-তে মামলাটি দায়ের করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা অভিযোগ করেছিলো যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও হলোকাস্টের পর ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে ইসরাইল।
রায় উপস্থাপনের সময় প্রিজাইডিং জাজ হুয়ান ডনোঘু বলেন, কনভেনশন অনুযায়ী গণহত্যা প্রতিরোধের মধ্যে রয়েছে, কোনো গোষ্ঠীর সদস্যদের গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি রোধ করা এবং কোনো গোষ্ঠীকে ধ্বংস করারা জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো পদক্ষেপ প্রতিরোধ করা।
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগকে ‘দ্বিচারিতা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। বলেছে,“এখন বিশ্ব উল্টে গেছে।”
রায়ের পর, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গণহত্যার দাবিকে ‘আক্রোশ প্রসূত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে এ কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো যে, ‘কোনো রাষ্ট্রই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, এই সিদ্ধান্ত ‘দখলদারিত্বকে চিহ্নিত করতে এবং গাজায় সংঘটিত অপরাধ উন্মোচনে’ ভূমিকা রাখবে।
অ্যাডভোকেসি গ্রুপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই রায়ের প্রশংসা করেছে।
আইসিজের দেয়া এই আদেশ মেনে চলা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য আইনত বাধ্যতামূলক। ইসরাইল এই রায় মেনে চলবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের কার গণহত্যার মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে, আদালতের কয়েক বছর সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স এবং এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে।