চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, মিয়ানমারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধরত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও জাতিগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘু গেরিলা দলগুলি যুদ্ধবিরতির সমঝোতায় পৌঁছেছে। মিয়ানমারের সামরিক সরকার এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, বুধবার ও বৃহস্পতিবার কুমিং-এ চীনের মধ্যস্থতায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই সমঝোতা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মিয়ানমার ও চীনের সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুমিং চীনের প্রাদেশিক রাজধানী।
বেইজিং-এ এক দৈনিক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “চীন আশা করে যে, মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি বিবেক দিয়ে এই সমঝোতা বাস্তবায়ন করতে পারবে, পরস্পরের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম দেখাবে এবং আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবে।”
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন সাংবাদিকদের এক অডিও বিবৃতিতে বলেন, দুই পক্ষই কুমিং-এ সাক্ষাৎ করেছে এবং বৈঠকের পর অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
জাও মিন তুন আরও বলেন, “আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব। যুদ্ধবিরতিকে জোরালো করতে আমরা কাজ করে যাব।”
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি আগেই হয়েছিল, কিন্তু সেই চুক্তিকে দুই পক্ষই মর্যাদা দেয়নি।
চীনের মুখপাত্র মাও বলেন, মিয়ানমারের সামরিক সরকার ও ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ (এই জোটে রয়েছে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি ও আরাকান আর্মি) অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে সম্মত হয়েছে।
মিয়ানমারের স্বাধীন গণমাধ্যম ও বর্মী ভাষার বিদেশী সংবাদ সংস্থাগুলিও একই তথ্য দিয়েছে, তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে জোটের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি কোনও মন্তব্য আসেনি।
প্রতিবেদনগুলিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অন্যান্য অঞ্চলে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রযোজ্য হবে না।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত আউং সান সু চি-র সরকারকে সেনা বাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করার পর শুরু হওয়া সহিংসতায় মিয়ানমার বিপর্যস্ত। থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স অক্টোবরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছিল এবং গত সপ্তাহে এই দেশের সঙ্গে চীনের সীমান্তে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ লাউক্কাইং শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল তারা।