দুই বৈরি কোরিয়া শুক্রবার তাদের বিতর্কিত সামুদ্রিক সীমান্ত বরাবর উস্কানিমূলক মহড়ার অংশ হিসেবে কয়েক রাউন্ড কামানের গোলা নিক্ষেপ করেছে এবং একে অপরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, উস্কানি দিলে কড়া জবাব দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অন্তঃসারশূন্য আন্তঃকোরীয় চুক্তি লঙ্ঘন করে পরস্পরকে এই হুমকি।
এই ঘটনার ফলে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে উত্তর কোরিয়া সম্ভবত তাদের অস্ত্র-পরীক্ষা জোরালো করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার যুগ্ম চিফ অফ স্টাফ বলেন, শুক্রবার সকালে তাদের পশ্চিম সমুদ্রসীমার উত্তরে ২০০ রাউন্ডের বেশি গুলি চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। প্রায় এক বছরের মধ্যে এই প্রথম উত্তর কোরিয়া সমুদ্রে এমন গুলি চালানোর মহড়া করলো।
যুগ্ম চিফ অফ স্টাফের মুখপাত্র লি সুং জুন টিভিতে সম্প্রচারিত এক ব্রিফিং-এ বলেন, উত্তর কোরিয়ার এই গোলাবর্ষণ “একটি প্ররোচনামূলক কাজ যা কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি বিঘ্নিত করবে ও উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।” লি জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ডের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, শুক্রবার বেলার দিকে দুই দ্বীপ-সীমান্তে তাদের বাহিনী সমুদ্রসীমার দক্ষিণে কয়েক রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ৪০০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়ার আগে পাঁচটি প্রধান সীমান্তবর্তী দ্বীপে রাস্তার লাউডস্পিকার মারফত ও লিখিত বার্তা পাঠিয়ে বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন।
দুই কোরিয়ার মধ্যে স্বল্পমেয়াদী সুসম্পর্কের সময় ‘২০১৮ সমঝোতা’ হয়েছিল। দুই দেশের সীমান্ত বরাবর নির্ধারিত বাফার ও ‘উড়ান-মুক্ত’ এলাকায় গোলাগুলি নিক্ষেপ ও আকাশপথে নজরদারি স্থগিত রাখার কথা হয়েছিল। তবে নভেম্বরে উত্তর কোরিয়া সফলভাবে সামরিক গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করায় দুই কোরিয়া এই চুক্তি ভঙ্গ করতে পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে ওই সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ার মুখে।
দুই কোরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে দুর্বলভাবে চিহ্নিত সমুদ্রসীমানায় ১৯৯৯, ২০০২ ও ২০০৯ সালে রক্তক্ষয়ী নৌ-সংঘর্ষ হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রণতরীতে উত্তর কোরিয়ার কথিত টর্পেডোর আঘাতে ২০১০ সালের মার্চে ৪৬ জন দক্ষিণ কোরীয় নাবিক নিহত হয়েছিলেন।