ক্রিসমাসের ছুটির পর ফ্লু, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্টের অনেক হাসপাতাল মাস্ক বাধ্যতামূলক করছে এবং লোকজনের আনাগোনায় সীমারেখা টানছে। ভাইরাসজনিত এইসব রোগের মোকাবেলা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, সাম্প্রতিককালের অন্যান্য শীতের মতো এত ভয়াবহ হয়ে উঠবে না এই মরসুম, তবে তারপরও হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালের ভর্তি হতে পারে এবং গোটা দেশে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
নিউইয়র্ক সিটি গত সপ্তাহে এই শহরের ১১টি সরকারি হাসপাতালে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। লস এঞ্জেলিস ও ম্যাসাচুসেটসেও গত সপ্তাহে একই ধরনের পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কিছু হাসপাতালে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে ফ্লু ও কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রিসমাসের আগে ৩১টি প্রদেশে উচ্চমাত্রার ফ্লুয়ের মতো অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার দেশের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশের কথা রয়েছে, তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আগাম জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে অনেক প্রদেশে সংক্রমণ বাড়বে।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের অধিকর্তা ড. ম্যান্ডি কোহেন বলেন, “জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আমরা যা দেখছি তা সত্যিই রোগ বৃদ্ধি ঘটছে , বিশেষ করে ফ্লু রোগের ক্ষেত্রে।”
কোহেন আরও বলেন, কিছু ভাল খবর রয়েছে। ফ্লু ও কোভিড-১৯ রোগ এই মাসের মধ্যে বাড়তে পারে, তবে তারপর তা নিম্নগামী হবে।
"ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. উইলিয়াম স্কাফনার বলেন, “আমার মনে হয় না পরিস্থিতি খুব বাড়াবাড়ি হবে।”
কোহেন সবাইকে টিকা নিতে অনুরোধ করেছেন এবং ফ্লু ও কোভিড-১৯-এর জন্য চিকিৎসা নিতে বলেছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিকা দেওয়ার হার এই বছর কম। সিডিসির টিকা সমীক্ষার সর্বসাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৪৪ শতাংশ ফ্লু-র টিকা নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ১৯ শতাংশ মতো ডিসেম্বরের প্রথম দিকে আপডেটকৃত কোভিড-১৯ টিকা নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনার নতুন উপরূপ জেএন.১ সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে বা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আক্রমণ করতে পারে, তবে বর্তমানে থাকা অন্যান্য উপরূপের চেয়ে এটি আরও গুরুতর রোগ তৈরি করতে পারে, এমন প্রমাণ নেই।
.সিডিসি আরও জানিয়েছে, আরেকটি মরসুমি ভাইরাস যা রেসপিরেটরি সিনসাইটিকাল ভাইরাস বা আরএসভি নামে পরিচিত তার বিরুদ্ধে টিকাকরণের হার হতাশাজনক। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে হালকা জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়, তবে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।