ইউরোপে যাবার পথে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা লিবিয়ার উপকূলে ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা। এতে নারী ও শিশুসহ ৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানায় তারা।
বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে সংঘটিত জাহাজডুবি ভূমধ্যসাগরের এই অংশে সর্বশেষ মর্মান্তিক ঘটনা। কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরোপে উন্নত জীবনের সন্ধানে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বিপজ্জনক রুটে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছেন।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে জানায়, ৮৬ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে নিয়ে পাড়ি দেবার সময় প্রবল ঢেউয়ে পশ্চিম উপকূলের জুওয়ারা শহরের কাছে নৌকাটি ডুবে যায়।। বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের তথ্যমতে, ৬১ জন ডুবে গেছে।
রবিবার এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সীমান্ত সংস্থা জানিয়েছে, তাদের অনুসন্ধান বিমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উদ্ধার কাজের সময় সেখানে আংশিক ভাবে বিধ্বস্ত রাবার বোটটিকে খুঁজে পেয়েছে।
ফ্রন্টেক্স নামে সংস্থাটি বলছে, প্রতিকূল ‘’আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রের ঢেউ প্রায় ৮.২ ফুট উচ্চতায় উঠলে নৌকাটির যাত্রীরা মারাত্মক বিপদের সম্মুখীন হয়।‘’
লিবিয়ার কোস্টগার্ড নীরব
অ্যালার্ম ফোন, যেটা বিপদে পড়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য খোলা একটা হটলাইন, তাদের এক টুইটবার্তায় জানিয়েছে, জাহাজে থাকা কয়েকজন অভিবাসন প্রত্যাশী এই স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তারা লিবিয়ার কোস্টগার্ডসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেয়। কিন্তু লিবিয়ার কোস্টগার্ড জানিয়ে দেয়, তারা ‘’কোন উদ্ধার অভিযান চালাবে না।‘’
তাৎক্ষণিকভাবে লিবিয়ার কোস্টগার্ড বাহিনীর কাউকে মন্তব্যের জন্য পাওয়া যায়নি।
লিবিয়াকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা অভিবাসী প্রত্যাশীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ন ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে ২০১১ সালে নেটো-সমর্থিত অভ্যুত্থানে দীর্ঘ সময়ের নেতা মুয়াম্মার গাদাফি ক্ষমতাচ্যুত এবং নিহত হবার পর থেকেই উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে বিশৃঙ্খলা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে।
আইওএমের মুখপাত্র ফ্লাভিও ডি গিয়াকোমো জানিয়েছেন, এ বছর ইউরোপ যাবার এই পথে প্রায় ২২৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।