কয়েক সপ্তাহের সমুদ্র যাত্রা শেষে রবিবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার একেবারে উত্তরে অবস্থিত আচেহ প্রদেশে ৩০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বহনকারী দুইটি নৌকা ভিড়েছে। যাত্রীদের মধ্যে বিধ্বস্ত নারী ও শিশু রয়েছে।
আচেহ বেসার রিজেন্সিতে অবস্থিত লামরেহ গ্রামের এক সমুদ্রতটে ১৩৫ যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা পৌঁছায়। এটি প্রায় দেড় মাস সমুদ্রে ছিল। নৌকার যাত্রী ৩৪ বছর বয়সী শহিদুল ইসলাম জানান, তারা বাংলাদেশে অবস্থিত শরণার্থী শিবির ছেড়ে এখানে এসেছেন। “নৌকা ডুবে যাচ্ছিল। আমাদের কাছে কোনো খাবার বা পানি ছিল না”।
অপর নৌকাটি ১৮০ যাত্রীসহ পিদিয়ে রিজেন্সির ব্লাং রায়া গ্রামের এক সমুদ্রতটে নোঙ্গর করে। যথোপযুক্ত রসদ ছাড়াই এটি প্রায় ২৭ দিন আন্দামান সাগরে ভেসে ছিল। নৌকার যাত্রী মাহমুদ হুসেইন (২৫) জানান, তিনি নৌকার মালিককে ৪০ হাজার টাকা (৩৬৩ ডলার) দিয়েছেন যাতে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করতে পারেন।
হুসেইন বলেন, “আমরা ইন্দোনেশিয়া এসেছি, কিন্তু যদি অন্যান্য দেশ আমাদের সাহায্য করতে চায় তাহলে আমরা সেসব দেশে যেতে আগ্রহী।”
হুসেইন নিশ্চিত করেন, একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে অপর একটি নৌকা আশ্রয়প্রত্যাশীদের নিয়ে রওনা হয়। তবে এটি নিখোঁজ রয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা সতর্ক করেছে, দ্রুত উদ্ধার করা না হলে নিখোঁজ নৌকার যাত্রীরা মারা যেতে পারেন।
নভেম্বর থেকে শুরু করে দেড় হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রত্যাশী নৌকায় করে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে এসেছেন। আচেহ উতারা জেলা ও সাবাং দ্বীপের বাসিন্দারা কাউকে কাউকে তীরে ভিড়তে দেয়নি, যার ফলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এক বিবৃতিতে জানান, তার সরকার সন্দেহ করছে, গত কয়েক সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায়, বিশেষত, আচেহ প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অনুপ্রবেশের সংখ্যা বাড়ার কারণে মানব পাচার বেড়েছে। ।