মাহসা আমিনির পরিবারের আইনজীবী শনিবার বলেছেন, পুলিশিহেফাজতে মারা যাওয়া ইরানি কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে প্রদত্ত মরণোত্তর মানবাধিকার বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য তাঁর পরিবারকে ফ্রান্সে যেতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আমিনি ২০২২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সে ইরানের পুলিশ হেফাজতে মারা যান। সে সময় নারীদের জন্য ইসলামী প্রজাতন্ত্রের কঠোর পোশাকের নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে আমিনিকে ইরানের ধর্মীয় পুলিশ বন্দী করেছিলো।
তার পরিবার ও সমর্থকরা বলছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ইরানি কর্তৃপক্ষের দাবি, অজানা কোনো অসুস্থতার কারণে পুলিশের হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
অক্টোবরে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের মানবাধিকার বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার, সাখারভ পুরস্কারে আমিনিকে এবং তার মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনকে ভূষিত করে।
শনিবার, ফ্রান্সে তার পরিবারের আইনজীবী চিরিন আরদাকানি এএফপিকে বলেন যে আমিনির বাবা-মা এবং ভাইকে শাখারভ পুরস্কার গ্রহণের জন্য ফ্রান্সগামী বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও পরিবারকে ইরান ত্যাগ করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং তাদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরদাকানি বলেন, ইরানি কর্তৃপক্ষ এর আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনো নিহতের পরিবারের কথা বলা ঠেকাতে এতটা সক্রিয় হয়নি।
মাহসা আমিনির মৃত্যু ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত করে।
যা কিনা "নারী, জীবন, স্বাধীনতা" নামে পরিচিত বিশ্বব্যাপী একটি আন্দোলনও তৈরি করেছিল। এই আন্দোলন ইরানের সমস্ত নারীর উপর হিজাব চাপিয়ে দেওয়ার এবং তেহরানের মুসলিম ধর্মগুরুর নেতৃত্বাধীন সরকারের অবসানের আহ্বান জানিয়েছিল।
ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন করেছে, শত শত বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে। কর্মকর্তারা এই বিক্ষোভকে "দাঙ্গা" বলে অভিহিত করেছে এবং তাতে অংশ নেওয়ার অভিযোগে কয়েক ডজন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
সাখারভ পুরস্কার, যার সঙ্গে থাকছে ৫০ হাজার ইউরো (৫৩ হাজার ডলার) অর্থ পুরস্কারও। পুরস্কারটি ১৩ ডিসেম্বর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি অনুষ্ঠানে হস্তান্তর করার কথা ছিল৷