মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাদের দুই নেতার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা জানিয়েছে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। তারা বলেছে, চাপ এবং বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা সমস্যার সমাধানে সহায়ক নয়।
গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে চীন, ইরান ও তালিবান শাসিত আফগানিস্তানসহ নয়টি দেশের ২০ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ।
শুক্রবার তালিবানের ভাইস এবং ভার্চ্যু মন্ত্রকের প্রধান মোহাম্মদ খালিদ হানাফিকে আফগান-সম্পর্কিত বিষয়ে দোষী করে তালিকাভুক্ত করা হয়। আফগানিস্তান বিজ্ঞান একাডেমির প্রধান ফরিদউদ্দিন মাহমুদের নামও তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, “শুধুমাত্র লিঙ্গের ভিত্তিতে নারী ও মেয়েদের অধিকার দমনের” জন্য দায়ী এই দুই তালিবান নেতা।
আফগানিস্তানে তালিবান, মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণীর উপরে শিক্ষা গ্রহণ এবং বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে নারীদের শিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে। ইসলামি শরীয়াপন্থী এই দলটি দুই বছর আগে আমেরিকা-সমর্থিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে। আফগানিস্তানের প্রশাসনকে ইসলামিক আমিরাত বা আইইএ হিসাবে ঘোষণা করে তারা।
তালিবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে বলেন, “আইইএ'র দুই কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রকের আরোপিত বিধিনিষেধের নিন্দা জানাই আমরা।”
তিনি ওয়াশিংটনকে তার সরকারের ওপর “চাপ ও বিধিনিষেধ আরোপ” থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অতীতের “ব্যর্থ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করা উচিত হচ্ছে না” যুক্তরাষ্ট্রের।
মুজাহিদ আরও বলেন, “ইসরাইলকে সমর্থনকারী আমেরিকা নিজেই মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় লঙ্ঘনকারীদের মধ্যে একটি। তাই অন্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তাদের নিষিদ্ধ করা অন্যায্য এবং অযৌক্তিক।”
যুক্ত্ররাষ্ট্রের শুক্রবারের ঘোষণায়, মাহমুদকে নারী ও মেয়েদের ওপর শিক্ষা নিষেধাজ্ঞার অন্যতম সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়, হানাফির মন্ত্রকের সদস্যরা “অপহরণ, ছুরিকাঘাত ও মারধরসহ গুরুতর মানবাধিকার লংঘনে জড়িত।”তাছাড়া, শিক্ষাসহ নারীদের অন্যান্য কাজে বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিবাদে আন্দোলনরত আফগানদের ওপরও হামলা চালানোর অভিযোগ তোলা হয় তাদের বিরুদ্ধে। ঐ বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে তালিবানের িএই সব বিধিনিষেধের কারণে আফগানিস্তান পৃথিবীর একমাত্র দেশে যেখানে নারী ও মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঝা রয়েছে।
শুক্রবারের এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রে দোষী সাব্যস্ত এই ব্যক্তিবর্গের সমস্ত সম্পত্তি এবং সুবিধা জব্দ করে এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করাতে বাধা দেয়।
বর্তমান তালিবান শাসকরা তাদের নীতিকে সমর্থন করে বলে, তারা আফগান সংস্কৃতি এবং ইসলামী শরীয়া আইনের প্রয়োগ করছে । যদিও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর বিদগ্ধ ব্যক্তিরা এবং সরকার অবশ্য তাদের এই দাবির সাথে একমত পোষণ করে না।